ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু গৃহকর্মীর শরীরে খুন্তির ছ্যা‍ঁকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
শিশু গৃহকর্মীর শরীরে খুন্তির ছ্যা‍ঁকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরগুনা: বরগুনার আমতলী উপজেলার জাহানারা (১১) নামে এক শিশু গৃহকর্মীর শরীরে খুন্তির ছ্যাঁকা ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক সেনা র্কমকর্তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) শিশুটিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

শিশুটি উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কালীপুরা গ্রামের মৃত আব্বাস মোল্লা মেয়ে।

এদিকে, সকালে আমতলী রিপোর্টাস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে শিশুটির ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন তার মা সাফিয়া বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চার মাস আগে জাহানারার বাবার মৃত্যু হয়। অভাবের সংসরে সাফিয়া বেগম মেয়েকে চাচী শাশুড়ি তাসলিমা বেগমের কাছে দেয় লালন পালনের জন্য।

তাসলিমা বেগম জাহানারাকে গৃহকর্মী হিসেবে তার বোনের মেয়ে ও মেজর শরীফ আল মারুফের স্ত্রী অনি বেগমের বাসায় ঢাকা সেনানিবাসের স্টাফ কোয়াটারে পাঠায়।

গত ২৮ অক্টোবর অনি বেগম জাহানারাকে তার শরীর মালিশ করতে বলে। একপর্যায়ে জাহানারা ঘুমিয়ে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি জাহানারার হাতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন।

৩০ অক্টোবর সকালে জাহানারা পটুয়াখালীতে তাসলিমা বেগমের বাড়িতে আসে। এরপর সেখান থেকে সাফিয়া বেগম মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

শিশু জাহানারা জানায়, গত চার মাস ধরে সামান্য ভুলেই তাকে মারধর করতেন মেজরের স্ত্রী। মারধরের পরে এ ঘটনা কাউকে না বলতে নিষেধ করা হতো। তাই সে ভয়ে এতোদিন ধরে নির্যাতন সহ্য করেছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সেনা কর্মকর্তা মেজর শরীফ আল মারুফের স্ত্রী অনি বেগম মোবাইল ফোনে জানান, জাহানারা আলমিরা থেকে স্বর্ণ চুরি করে পালাতে চেষ্টা করে। এ সময় তিনি রান্নাঘরে ছিলেন। হাতে খুন্তি থাকায় রাগের মাথায় আঘাত করেছেন। পরে দুঃখ প্রকাশ করে তাকে গ্রামের বাড়ি পাঠানোর সমস্ত ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

তার স্বামী বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কঙ্গোতে কর্মরত আছেন বলেও তিনি জানান।

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জোহাইনুল ইসলাম শুভ জানান, জাহানারার বাম হাতের বাহুতে চৌকা আকৃতির পাঁচ সেন্টিমিটার পোড়া দাগ রয়েছে। এছাড়া, পিঠ, উরু, বাহু, কোমরে লাঠি দিয়ে পেটানোর দাগ রয়েছে।

আমতলী কোর্টের আইনজীবী মো. আবুল কাশেম জানান,  পিতাহারা হতদরিদ্র শিশু জাহানারার চিকিৎসাসহ আইনি ব্যবস্থার সমস্ত দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত (তদন্ত) কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাদল জানান, হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক জানান, শিশুটির পরিবার থেকে সহযোগিতা চাইলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এনটি/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।