ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গ্যাস লিকেজ সমাধানে কচ্ছপগতি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
গ্যাস লিকেজ সমাধানে কচ্ছপগতি!

ঢাকা: আড়াই বছরে তিতাস গ্যাস উদগীরণ এলাকার কূপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং গ্যাস লিকেজ সমস্যা সমাধানের মাত্র অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)।
 
বাকি কাজ সম্পন্ন করতে আর মাত্র ছয় মাস সময় হাতে রয়েছে।

তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।     
 
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই প্রকল্পে আড়াই বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ৫৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
 
নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা এবং সমস্যা সমাধানে কাঙ্খিত অগ্রগতি না হওয়ায় প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে সঠিক ব্যাখ্যা চেয়েছে আইএমইডি।
 
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা নিরসন, ও কূপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং গ্যাস উদগীরণ সমস্যা কমানোর জন্য ‘তিতাস ফিল্ডের গ্যাস উদগীরণ এলাকায় কূপগুলোর ওয়ার্কওভার’ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। মূল প্রকল্পের কাজ ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় মেয়াদে প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
 
প্রকল্পের অনুমোদিত সংশোধিত  উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুসারে তিতাস গ্যাসফিল্ডের ১, ২, ৫, ১০ ও ১১ নম্বর কূপের গ্যাস লিকেজ সমস্যা সমাধান করে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের কথা।
 
এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ২৪০ কোটি টাকা। কিন্তু গত আগস্ট পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ১২৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের অর্ধেক টাকা এখনও ব্যয় করা হয়নি। ফলে প্রকল্পের লক্ষ্যও পূরণ হয়নি।
 
আইএমইডি’র প্রতিবেদনে অনুসারে, ৫, ১০ ও ১১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ তিনটি কূপে দৈনিক ৩০, ২০ ও ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাকি ১ এবং ২ নম্বর কূপের গ্যাস লিকেজ কমানোর কাজ এখনও শুরু হয়নি। যে কারণে প্রকল্পের কাজ বেঁধে দেওয়া সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
 
ফলে প্রকল্পের সময় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য আবারও আবেদন করা হয়েছে। এটি করা হলে মূল বাস্তবায়ন কালের তুলনায় ৬০ শতাংশ মেয়াদ বৃদ্ধি পাবে। এটিকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা হিসেবে উল্লেখ করেছে আইএমইডি।
 
আইএমইডি’র একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৬০ শতাংশ সময় বৃদ্ধি চাওয়া হয়েছে। এটি প্রকল্প ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকল্পটিরি বাস্তবায়ন এবারের বর্ধিত সময়ে যেন সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে কঠোরভাবে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্প ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে সংস্থা পর্যায়ে সর্বাত্মক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে বিজিএফসিএল’কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
প্রকল্প পরিচালক আজমল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘গ্যাস লিকেজ সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি কূপের কাজ শুরু করেছিলাম  ২০১৩ সালের ২২ জুলাই। কিন্তু কখনও প্রকল্পের কোনো অঙ্গের ব্যয় কমেছে, আবার কিছু অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের আন্তঃখাত সমন্বয় করতে ডিপিপি সংশোধন করতে হয়েছে। তারপরও তিনটি কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে। এখনও ১ ও ২ নম্বর কূপের কাজ বাকি আছে। আশা করছি, আগামী বছরের জুনের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবো’।
 
গ্যাস লিকেজ সমাধানে ধীরগতি প্রসঙ্গে আজমল হক বলেন, ‘কূপ খননের যন্ত্র সঠিক সময়ে আমরা বাপেক্সের কাছ থেকে পাইনি। যে কারণে সঠিক সময়ে পাঁচটি কূপের গ্যাস লিকেজ সমস্যা সমাধান করতে পারিনি’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এমআইএস/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।