ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুই যুগ পর পাগলা থানার নতুন ভবন উদ্বোধন

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
দুই যুগ পর পাগলা থানার নতুন ভবন উদ্বোধন  ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিলো ১৩ বছর আগে। এ থানা ভবন নির্মাণে সেই সময়ে কাঙ্ক্ষিত জমি পায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ফলে বাতিল হয়ে যায় দরপত্র।

এরপর দীর্ঘ অপেক্ষা পর ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল এলো সুসংবাদ।

পাগলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে অনুমোদন পেলো। কিন্তু ভবন না থাকায় ভাড়া বাড়িতেই চলছিলো কার্যক্রম। তবে এবার আর জমি পেতে সমস্যা হয়নি।

নিজেদের প্রয়োজনে স্থানীয়রাই জমি দেন। তাদের দেওয়া সেই তিন একর এক শতাংশ জমিতেই নির্মিত হয়েছে নতুন ভবন।

বুধবার (০২ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় নবনির্মিত এ ভবনের উদ্বোধন করবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।

আর এর মধ্যে দিয়েই স্থানীয় উপজেলার আট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের প্রায় দুই যুগের আন্দোলনেরও পূর্ণতা পাচ্ছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা এখন স্বপ্নপূরণ ও উৎসবের আমেজে মেতেছেন।  

নতুন চেহারা পাওয়া পাগলা থানা ভবনে করা হয়েছে নয়নাভিরাম আলোকসজ্জা। দূর থেকে মোহময় একটি স্থানই মনে হচ্ছে থানা ভবনকে দেখে। মঞ্চ এবং প্যান্ডেলের আকার-আকৃতি দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে থানার নতুন ভবন নিয়ে তাদের উৎসাহ। থানা চত্বরে আঁকা হয়েছে আলপনা।

ভবন উদ্বোধন ও পুলিশ প্রধানকে বরণ করে নিতে এমনই নানা কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে জেলা পুলিশ। অধীর আগ্রহে স্থানীয় বাসিন্দারা অপেক্ষা করছেন নতুন এ ভবনের উদ্বোধনের।

জানা যায়, ঝঞ্জারমুখর রাজনীতির জন্য পরিচিতি গফরগাঁও উপজেলার টাংগাব, দত্তেরবাজার, উস্থি, লংগাইর, পাইথল, পাঁচবাগ, মশাখালী ও নিগুয়ারী ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভৌগলিক অবস্থান ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য প্রায় দুই যুগ ধরে পাগলা থানা স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন করছিলো।

২০০২ সালের ১১ নভেম্বরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাগলা থানার অনুমোদন ও উন্নয়নের আদেশ দিয়েছিল। ঠিক পরের বছরই মন্ত্রণালয় থেকে গণপূর্ত বিভাগে পাগলা থানা ভবন নির্মাণের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছিলো।

২০০৩ সালের মে মাসেই গণপূর্ত বিভাগ এক কোটি আট লাখ টাকা ব্যয়ে পাগলা থানা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্রও আহ্বান করে।

কিন্তু ভবন নির্মাণের জন্য জমি না পাওযায় তীরে এসে তরী ডুবে যায়। বাতিল হয়ে যায় দরপত্র। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পাগলা বাজার এলাকায় তিন একর এক শতাংশ জমি পুলিশ বিভাগকে দিয়ে দেয়। ওই সময় তারা ভবন নির্মাণের জমিতে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ভরাট কাজও করে।

২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাগলা থানা অনুমোদনের গেজেট প্রকাশ করে। পরে ওই বছরের ২৩ মে মশাখালী ও পাঁচবাগ ইউনিয়নসহ মোট আটটি ইউনিয়ন নিয়ে পাগলা থানার পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু হয়।

এরপর স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগ দুই কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পাগলা থানার দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে। প্রায় আড়াই মাস আগে এ ভবন থেকেই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁন মিয়া।

দু’তলা ভবনের পাগলা থানার নিচ তলায় মালখানা, অস্ত্রাগার, পুরুষ, মহিলা, শিশুসহ তিনটি হাজতখানা, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কার্যালয়, উপ-পরিদর্শকদের (এসআই) কক্ষ ও অফিস কক্ষ রয়েছে। আর দ্বিতীয় তলায় থাকছে ৫০জন কনস্টেবল থাকার কক্ষ, অতিথি কক্ষ ও নামাজখানা।

এসব বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, থানা চত্বরে প্রায় ১৫ হাজার লোক ধারণমতার প্যান্ডেল ও মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) থানা ভবনের উদ্বোধনের পাশাপাশি পুলিশের জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬

এএটি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।