ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এয়ারপোর্ট টু আব্দুল্লাহপুর, সাড়ে তিন কি.মি. যেতে ঘণ্টা পার

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
এয়ারপোর্ট টু আব্দুল্লাহপুর, সাড়ে তিন কি.মি. যেতে ঘণ্টা পার

ঢাকা: সকাল সাতটা, আব্দুল্লাহপুর বাস স্ট্যান্ড। রাজধানীর প্রায় সব রুটের উদ্দেশেই এখান থেকে ছেড়ে যায় বিভিন্ন পরিবহনের সিটিং সার্ভিস ও লোকাল বাস।

যাত্রীদের তাই এখান থেকে বাস পেতে কোনো অসুবিধা হয়না বা বাসেরও কোনো সংকট নেই। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে এখান থেকে বাসে উঠতে পারছেন ঠিকই, কিন্তু তাতেই ভোগান্তির শুরু!
 
রাস্তায় পার্কিং করা গাড়িতেই আব্দুল্লাহপুরের দুর্ভোগ। সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন রুটের বাস রাস্তায় এলোমেলো ভাবে দাঁড়িয়ে থাকায় জটলা বাধে আব্দুল্লাহপুরে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও যমুনা নদীর ওপার থেকে আসা রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের গাড়িগুলো।
 
উত্তরা-১০ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া সড়কের মুখের আব্দুল্লাহপুরের মাছের আড়তের কারণেও যানজটের জটলা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় কামারপাড়া সংলগ্ন স্লুইস গেট পর্যন্ত। সকাল সাড়ে সাতটায় স্লুইস গেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তার ওপরেই সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর, সায়েদাবাদ, সাভারগামী বাস ও মিনিবাস। এতে যানজট আরও বেশি বাধে।
 
পরিবহন শ্রমিক কাশেম আব্দুল্লাহপুর রাস্তায় বাস রাখা সম্পর্কে বলছিলেন, এটা পার্র্কিং এরিয়া না। এটা বাস স্ট্যান্ড। কয়েকটি কোম্পানির গাড়ি এখান থেকেই বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যায়। দেখা গেলো রাইদা, জাবালে নূর, বসুমতি, প্রজাপতি প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি রাস্তার পাশে পার্কিং এবং রাস্তা বন্ধ রেখে দিক পরিবর্তন করায় গাড়ির জটলা আরো দীর্ঘ হচ্ছে।
 
সকাল আটটায় দেখা যায় আব্দুল্লাহপুর মোড়ের খন্দকার ফিলিং স্টেশনের সামনে পার্কিং করা বাসের সারি। সেই সারি ধীরে পার হতে গিয়ে ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের গাড়িগুলে বড় ধরনের জটলা তৈরি হয়ে পুরো সড়ক প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।  

অন্যদিকে রাস্তার অপর পাশে উত্তরবঙ্গগামী সবগুলো বাস কোম্পানির কাউন্টার থাকায় তাদের গাড়িগুলো রাস্তায় পার্কিং করছে, যাত্রী তুলছে। ফলে রাজধানী থেকে আশুলিয়া, গাজীপুর, ময়মনসিংহ বা উত্তরবঙ্গগামী গাড়ির জট গিয়ে দাঁড়াচ্ছে হাউসবিল্ডিং পর্যন্ত।
 
রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো আব্দুল্লাহপুর ছেড়ে যাওয়ার সময়ই শুরু হয় যাত্রী তোলার পাল্লাপাল্লি লড়াই। ফলে একটি বাস আর একটি বাসকে পেছেনে ফেলতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে আড়াআড়ি ভাবে। এ থেকেই বিমানবন্দর পর্যন্তই তীব্র যানজট শুরু হয় সকাল থেকেই।
 
উত্তরা-৯ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের বাসিন্দা সানোয়ার হোসেন বলছিলেন, আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাধারণত মানুষের গাড়িতে উঠতে কোনো সমস্যা হয়না। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় গাড়িতে ওঠার পর। হাউসবিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টার ওপরে। অথচ দূরত্ব মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার। স্বাভাবিক গতিতে এ পথ যেতে সময় লাগার কথা সর্বোচ্চ ১০ মিনিট।
 
এর কারণ কী? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর কোনো কারণ নেই। একমাত্র কারণ এ রুটে চলাচলকারী গাড়িগুলোর ওপর কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যেখানে খুশি, গাড়ি দাঁড় করাচ্ছে, যাত্রী তুলছে, নামাচ্ছে। একই কোম্পানির গাড়িকে আটকানোর জন্য ওই কোম্পানির গাড়ি রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে।
 
হাউস বিল্ডিং সরকারি কোয়ার্টারের বাসিন্দা সালেহউদ্দীন জানান, এ রাস্তার দুর্ভোগ সম্পূর্ণ বাস চালকদের তৈরি। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপর বিআরটিসির মতো প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি পার্কিং করে রাখে। তাই আব্দুল্লাহপুর থেকে গাড়ি বের হয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোই চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬ 
আরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।