ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ক্লিয়ারেন্স’ পেলেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মেহমানদের ভিসা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
‘ক্লিয়ারেন্স’ পেলেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মেহমানদের ভিসা

ঢাকা: বিশ্ব ইজতেমায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে বিদেশি মেহমান আসার ব্যাপারে ‘ক্লিয়ারেন্স’ পাওয়ার পর তাদের ভিসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
 
আসন্ন ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) সবিচালয়ে এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে প্রথর্ম পর্বে আগামী ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্বে ২০-২২ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও শতাধিক দেশ থেকে মুসল্লিরা অংশ নেন।
 
গতবছরও ১০১টি দেশ থেকে ২০ হাজার বিদেশি মেহমান বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এদের মধ্যে অনেক দেশের মন্ত্রীরাও এসে নির্বিঘ্নে চলে গেছেন। এবার আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি মেহমান আসতে পারেন।
 
বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের জন্য একটি ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এসবি এবং তাবলিগ জামাতের প্রতিনিধি নিয়ে একটি অভ্যর্থনা ডেস্ক থাকবে।
 
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশিদের অংশগ্রহণ উপলক্ষে কিছুটা নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেন মন্ত্রী।
 
‘কিছু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে বিদেশি মেহমান আমাদের দেশে তাবলিগ জামাতে যারা আসবেন কর্তৃপক্ষ আগেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিস্ট পাঠাবেন, লিস্ট দেখে আমরা তাদেরকে ভিসা দেবো। আমরা সেজন্যই তাবলিগ জামাতের কাছে আবেদন রেখেছি তারা যেন এই সমস্ত দেশ থেকে যারা আসবেন, তারা ক্লিয়ারেন্স দিলে সেই লিস্ট আমাদেরকে দিয়ে দেবেন, আমরা সেই অনুযায়ী ভিসা এবং অন্যান্য ব্যবস্থা করবো’।
 
পাশাপাশি জঙ্গি হুমকির প্রেক্ষাপটে সতর্ক থাকার কথাও জানান মন্ত্রী।
 
জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা সব সময় সতর্ক রয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা, নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছেন। জঙ্গির হুমকির বিষয়টি মাথায় রয়েছে, তারা (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) কাজ করছেন, এবং সাদা পোশাকেও কাজ করবেন।
 
বিশ্ব ইজতেমা সবার জন্য নির্বিঘ্ন করার এবং তারা যেন নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারেন সেজন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবার নিরাপত্তার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভি, গোয়েন্দা নজরদারি, পুলিশ-র‌্যাব এবং অন্যান নিরাপত্তা বাহিনীর টহল থাকবে, সব কিছুই নজরদারিতে থাকবে।
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি মাঝে মধ্যে বসে সার্বিক বিষয়ে কাজ করবে।  

এছাড়া পুলিশের নেতৃত্বে একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেখানে সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি থাকবে, সিসি টিভি ক্যামেরায় সমস্ত ইনফরমেশন সেখানে আসবে।
 
তিনি বলেন, ইজতেমা মাঠসহ আশেপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক গোয়েন্দা এবং সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। সব প্রবেশপথ ও কৌশলগত স্থানে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভি, ভিডিও ক্যামেরা থাকবে।
 
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়ক এবং আশেপাশের সড়কে যানজট নিরসনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, রেসকিউ টিম সব সময় থাকবে। মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেন ও বাস রাখা হবে। যাতে সারাদেশ থেকে মুসল্লিরা আসা-যাওয়া করতে পারেন।  
 
দু’দফায় বেতার ও টিভিতে বিশ্ব ইজতেমার বয়ান সম্প্রচার করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
 
বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরবর্তী সভা গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
 
গাজীপুরের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক, পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এবং বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপিস্থিত ছিলেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬
এমআইএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।