ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ধ্বংসের পথে নবাবগঞ্জের মৃৎ শিল্প

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৬
ধ্বংসের পথে নবাবগঞ্জের মৃৎ শিল্প ছবি-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) থেকে: প্রায় তিন যুগ আগেও ইচ্ছামতি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নোঙর করা থাকতো সারি সারি ট্রলার। সেসব ট্রলার থেকে মাটি নামানোর কাজে ব্যস্ত থাকতো অনেকে।

আবার কেউ কেউ ব্যস্ত থাকতো সেই মাটি দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন প্রকারের জিনিষপত্র ট্রলারে উঠাতে। আশপাশের বেশ কয়েকটি উপজেলার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের জন্য বিখ্যাত ছিল নবাবগঞ্জের মাটির তৈরি জিনিষপত্র।

কিন্তু সময়ের দাপটে প্লাস্টিক ও সিলভারের তৈরি জিনিষপত্রের কাছে হার মেনেছে মাটির তৈরি জিনিষপত্র। চাহিদা না থাকায় নবাবগঞ্জ উপজেলায় এখন নামেমাত্র টিকে আছে এই শিল্পটি। উপজেলায় এখন মাত্র শ' খানেক পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

বুধবার সকালে সরেজমিন বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের হরিসকুল পালপাড়া এলাকার সুবল পাল (৭০)।

পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখার সুযোগ পাননি তিনি। এছাড়া বাপ-দাদার পেশার প্রতি দরদ থাকায় এ পেশাতেই কেটে গেছে জীবন। তবে তার ঘরে জন্ম নেওয়া পাঁচ ছেলে সন্তানের কেউই এ পেশায় নেই বলে জানান তিনি। ছেলের বউদের নিয়ে অবসর সময় কাটানোর জন্য কোন রকমে নামেমাত্র ধরে রেখেছেন বাপ-দাদার পেশাটি।

তবে নবাবগঞ্জ উপজেলার আজিজপুর, হরিসকুল, জলারচর, ময়মনদি, গোল্লা, গোবিন্দপুর ও গালিমপুর এলাকার পালপাড়ার কয়েক হাজার পরিবারের অর্থ উপার্জন করার অন্যতম মাধ্যম ছিল ওই মৃৎ শিল্প। মাটির হাঁড়ি, ঢাকনা, বদনা, পানির চার, ফুলের টব ও চালের জালাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের জিনিষপত্রাদি তৈরি করতেন ওই মৃত শিল্পীরা। আশপাশের উপজেলাগুলোতে তাদের তৈরিকৃত মাটির জিনিষপত্রের চাহিদা ও সুনাম ছিল। নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা এলাকার মৃত অমুল্য পালের ছেলে উপেন পাল জানান, এখন আর আগের মতো মাটির তৈরি জিনিষপত্রের চাহিদা নেই। শুধু অর্ডার পাওয়া দইয়ের পাতিল তৈরি করে তারা তাদের ওই পেশাটি কোনরকমে টিকিয়ে রেখেছেন। তবে তার ছেলে এবং ভাতিজারা কেউই আর এই পেশায় নেই বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিল আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, মৃৎ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য মৃৎ শিল্পীদের উপজেলা প্রশাসন থেকে সব রকম সাহায্য সহযোগিতায় করা হয়ে থাকে।

এছাড়া তাদের যদি নির্দিষ্ট কোন দাবি দাওয়া থাকে সেগুলো লিখিতভাবে অবহিত করা হলে পরবর্তীতে সেই ব্যাপারে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।