ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিষেধাজ্ঞা শেষে কর্মব্যস্ত বরিশালের ইলিশের মোকাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৬
নিষেধাজ্ঞা শেষে কর্মব্যস্ত বরিশালের ইলিশের মোকাম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরিশাল: টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে একদিন পার হতে না হতেই কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের মোকামগুলো।

বুধবার রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এ মোকামে কিছু ইলিশের দেখা মিলেছে।

তবে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে পুরো ইলিশনির্ভর কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে মোকামগুলোতে। কয়েকদিন পরে এর পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মোকামের ব্যবসায়ীরা।

এভাবে পর্যায়ক্রমে মোকামগুলোতে ইলিশের পরিমাণ বাড়ার বিষয়টি মৎস্য বিভাগ তাদের সফলতা হিসেবেই দেখছেন। তাদের মতে, বিগত বছরের তুলনায় এবার নিষেধাজ্ঞার কঠোরতা ছিল অনেক বেশি। জেলেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেছেন। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর প্রথম দিনেই মোকামে যথেষ্ট পরিমাণে মাছের দেখা মেলেনি।

তবে জেলেরা বলছেন আরো দুই/একদিন না গেলে মাছের পরিমাণ বাড়বে কি কমবে তা বোঝা যাবে না। বাড়ার বিপরীতে কমেও যেতে পারে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশালের পোর্টরোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ নির্ভর কর্মব্যস্ততা ছিলো লক্ষণীয়। জেলেরা তাদের নৌকায় ইলিশ নিয়ে মোকামের ঘাটে আসছেন, শ্রমিকরা সে মাছ অবতরণ কেন্দ্রে নামাচ্ছেন আবার সেখান থেকে প্যাকেট করে বরফ দিয়ে ট্রাকে তুলে দিচ্ছেন, ব্যবসায়ীরা ঘুরে ঘুরে নিলামে মাছ কিনছেন, আর এভাবে সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। বরফকলগুলোতে চলছে বরফ উৎপাদনের কাজ, বরফ ভাঙার মেশিনেরও নেই কোন বিরাম।

বরিশাল মৎস্য পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী আশরাফ জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ার পরপরই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত ট্রলার সাগরের দিকে রওনা দেয়। সে ট্রলারগুলো ফিরে এলে আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে পুরনো রূপ ফিরে পাবে ইলিশ মোকামগুলো। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিরুপ প্রভাব পড়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. মাসুম জানান, গতকাল ও আজ এলসি সাইজের (৬০০-৮০০ গ্রাম) ইলিশের মণ ছিল ২৭-২৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজের (৪০০-৬০০ গ্রাম) ইলিশের মণ ছিলো ১৮ হাজার থেকে ১৯ হাজার টাকা, এর নীচে গোটকা সাইজের ইলিশের দর ছিলো ১৬ হাজার টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের মণ প্রতি দর ৪৫ হাজার টাকা, ১২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের মণ প্রতি দর ছিল ৫০ হাজার টাক‍া।

বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল জানান, বৃহস্পতিবার  ১০০ মণ ইলিশ বিক্রি হলেও শুক্রবার দিন শেষে এর পরিমাণ বাড়বে আশাকরি। দুই/একদিনের মধ্যে মাছের পরিমাণ বাড়লে ইলিশের দামও কমবে।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস জানান, গত কয়েক বছর নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৫ দিন। এ বছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য বেশি সময় পেয়েছে। এতে আগামীতে ইলিশের পরিমাণ আরো বাড়বে।

অপরদিকে, গত বছর অসাধু ব্যবসায়ীরা ইলিশ মজুদ করে রাখায় নিষেধাজ্ঞার শেষ দিনেই বাজারে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এ বছর বেশি মেয়াদকালেও কঠোরতা থাকায় সেটা তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। তাই বাজারে ইলিশের পরিমাণ এখনো বাড়েনি।

এ বছর বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৯৪২টি মোবাইল কোর্ট, এক হাজার ৮৪৪টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। যার অনুকূলে তিন হাজার ৯৪৯ কেজি ইলিশ জব্দ, ২৯ লাখ ২৭ হাজার আটশ’ মিটার অবৈধ জাল জব্দ, ১২ লাখ ৭০ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা, ৩৫৭টি মামলা দায়ের এবং ২৭৩ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৯০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৬
এমএস/আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।