ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কিশোর-কিশোরী পাঠাগারে চেতনার বিকাশ

রফিকুল আলম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৬
কিশোর-কিশোরী পাঠাগারে চেতনার বিকাশ ছবি: বাংলানিউজ

ধুনট (বগুড়া): ষষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারা। ঘরের মেঝেতে মাদুর পেতে বসা সবাই।

কেউ পড়ছে ম্যাগাজিন, কেউ গল্প বা উপন্যাস। কেউ কেউ মত্ত দাবা, লুডু ও ক্যারম খেলায়। এমনকি, সংগীত চর্চাতেও ব্যস্ত দু’একজন।

এর বাইরে যারা তাদের কেউ বাল্যবিয়ে, যৌতুক, লিঙ্গ বৈষম্য, মাদকসহ নানান সামাজিক ব্যাধি ও কুফল নিয়ে আলাপচারিতায় মত্ত।

এভাবেই এসব শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক মতবিনিময় ও আনন্দ-আড্ডায় সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে। ঘটছে চেতনার জাগরণ।

বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক পরিচালিত কিশোর-কিশোরী পাঠাগারে (ক্লাব) গিয়ে দেখা গেলো শিক্ষার্থীদের এমন আনন্দ ও আড্ডার চিত্র।

স্থানীয়রা জানান, ব্র্যাকের কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ধুনট উপজেলায় ১৯৯৫ সালে ২০টি কিশোর-কিশোরী পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এখানে বই পড়ার পাশাপাশি বাল্যবিয়ে, যৌতুক, মাদক, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতাসহ প্রজনন স্বাস্থ্য, নারী অধিকার ও এইডস ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া তাদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক  প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েও সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়।  

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই থেকে পাঠদান করা হয়। এরপর বিকেল ৪টা থেকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিশোর-কিশোরী পাঠাগারের কার্যক্রম শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু রাখা হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শ্রেণির পাঠ শেষে এ পাঠাগারে আসে।  

প্রতিটি পাঠাগারে সদস্য সংখ্যা হয় ৩০/৫০ জন। পাঠাগারে একজন করে কিশোরী নেত্রী রয়েছে। সে শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী বই, ম্যাগাজিন, সংগীত ও খেলার সামগ্রী সরবরাহ করে।  

ধুনট সদরপাড়া পাঠাগারের সদস্য কনিকা, তানিয়া, মৌ, মিম আকতার ও পারভিন জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়া শেষ করে প্রতিদিন এ পাঠাগারে আসে তারা। বিভিন্ন ধরনের বই, পত্র-পত্রিকা পড়ে নৈতিক শিক্ষা অর্জনের চেষ্টা করে।

এখানে এসে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে জানতে পেরেছে তারা। বয়‍ঃসন্ধিকাল, নারী অধিকার, বহু বিবাহ ও যৌন নিপীড়ন বিষয়ে তারা সচেতন হয়েছে।

একই পাঠাগারের সদস্য উজ্জ্বল, মেহেদী, জয়নাল, বিপ্লব ও সবুজ জানায়, তাদের বয়সের অনেকেই বখাটেপনা কিংবা মাদক সেবনে জড়িয়ে গেছে। কিন্তু তারা নিয়মিত এখানে সময় ‍দিচ্ছে।  

ব্র্যাকের কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কর্মসূচির মাঠ সংগঠক শাহীনা পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, কিশোর-কিশোরীদের জীবনদক্ষতা, জীবিকা ও কর্মদক্ষতা প্রশিক্ষণে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হয়। তারা নানা ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পাশাপাশি সামাজিক দক্ষতা অর্জনেও কাজ করেন। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে চেতনার বিকাশ ঘটছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
আরবি/‍এসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।