ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মার ভাঙনে ছোট হচ্ছে দোহারের মানচিত্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৬
পদ্মার ভাঙনে ছোট হচ্ছে দোহারের মানচিত্র ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দোহার (ঢাকা) ঘুরে: ঢাকার দোহার উপজেলায় সর্বনাশা পদ্মার ভাঙন কমেনি। বর্ষার পানি কমে যাওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া ওই ভাঙন চলছে এখনো।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ঢাকার দোহারে শুধুমাত্র বর্ষার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮০৫টি পরিবার। তবে, বর্ষা পরবর্তী ভাঙনের কোনো হিসাব নেই উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে। এতে করে প্রতি বছরই একটু একটু করে ছোট হচ্ছে দোহারের মানচিত্র।

পদ্মার নদীগর্ভে এখন ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ভিটেমাটি ও আবাদি জমি। পদ্মার ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙনের কারণে দিশেহারা দোহারের পাঁচটি উপজেলার কয়েক হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ।

দোহার উপজেলা পরিসংখ্যান তদন্তকারী আকরামুননেসা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, ভৌগলিক দিক থেকে দোহারের পূর্বে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা, পশ্চিমে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর, উত্তরে ঢাকার নবাবগঞ্জ এবং দক্ষিণে পদ্মানদী। আটটি ইউনিয়ন পরিষদ ও একটি পৌরসভা নিয়ে দোহারের গঠন। ২০১১ সালের আদমশুমারি প্রতিবেদন অনুযায়ী যার আয়তন ১২১.৪১ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা দুই লাখ ২৬ হাজার ৪৩৯ জন।

দোহার উপজেলা (পিআইও) সেকশনের অফিস সহায়ক রাহিমা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরের বন্যায় উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছয়টি ইউনিয়ন। ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের মধ্যে নয়াবাড়ি ইউনিয়নের ২৮৪টি পরিবার, সুতারপাড়া ১৯৫টি, নারিসা ১৫৯টি, মুকসুদপুর ২৬টি এবং বিলাসপুরে ৯০টি পরিবার রয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এসব পরিবারের বসতভিটা ও আবাদি জমি।

সরেজমিনে উপজেলার নারিসা এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা গেছে। এসময় পদ্মানদীরপাড়ে নারিসা পশ্চিমচর এলাকার আব্দুল মোমিন (৫৫) নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন, তাদের চার পুরুষ ওই এলাকায় বসবাস করে আসছেন। আগে কখনো পদ্মায় এত ভয়ংকর ভাঙন দেখা যায়নি। তবে, কয়েক বছর আগে পদ্মার মাঝনদীতে চর পড়ে ভরাট হওয়ার পর থেকে শুরু ভাঙনের। চলতি সপ্তাহে তার প্রতিবেশী জব্বার বেপারীর বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। এবার তাদের বাড়িঘর ভাঙনের পালা বলেও জানান তিনি।

মোমিনের প্রতিবেশী সোলাইমান বেপারি বাংলানিউজকে জানান, দিনে বাড়িতে থাকলেও রাতে পরিবারসহ অন্যের বাড়িতে থাকতে হয়। ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির আঙিনায় পদ্মার ঢেউ। যেকোনো সময় পদ্মায় হারিয়ে যাবে শেষ সম্বলটুকু।

দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে. এম. আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে উপজেলা থেকে তাদের সব প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। পদ্মার ভাঙনে দিনের পর দিন ছোট হয়ে আসছে দোহার উপজেলার মানচিত্র। উপজেলার ওই মানচিত্রে বসতভিটার বদলে নতুন করে স্থান করে নিচ্ছে পদ্মা নদী। তবে, খুব তাড়াতাড়ি ভাঙন এলাকার জন্যে ভাঙনরোধে বড় ধরনের প্রকল্প আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
পিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।