ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এডিসির জন্য (ভিডিও)

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৬
এডিসির জন্য (ভিডিও)

নতুন বাজার ট্রাফিক সিগন্যাল (ঢাকা): দুপুর ১২.২০ মিনিট। ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মাহবুব।

তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এলেন সার্জেন্ট আবু মুসাও।

এসেই লেগে গেলেন যানজট ছাড়তে। সে কি ব্যস্ততা, চোখে পড়ার মতো। এতক্ষণ পথরোধ করে যাত্রী ওঠা-নামা করছিলো বাসগুলো। কিন্তু এখন পথরোধ করে দাঁড়িয়ে থাকা দূরের কথা যাত্রী নিতে গেলেও তাড়িয়ে দিচ্ছিলেন তারা।

গুলশানের দিক থেকে যে পথটি সোজাসুজি প্রগতি সরণিতে গিয়ে মিশেছে সেই পথটি বন্ধ করে দেয়া হলো। সেখানে এসে সিএনজি অটোরিক্সাগুলো ইউটার্ন নিচ্ছিল। আর ইউটার্নের সময় খানিকটা জ্যামও লেগে যাচ্ছিল।

এরপর একবার এদিক, আরেকবার ওদিক দৌড়ে বাস তাড়াতে থাকলেন। ট্রাফিক কর্তার ভূমিকা দেখে অনেকে বলতে থাকলেন এই রকম করিৎকর্মা আর কিছু লোক থাকলে ঢাকার ট্রাফিকের এতো বেহাল অবস্থা হতো না।

মিনিট পাঁচেক সময় চলল তার এই ছোটাছুটি। এর মধ্যে বাড্ডার দিক থেকে গাড়িতে চেপে হাজির হলেন ট্রাফিকের এডিসি (সহকারী উপ-কমিশনার)। ভদ্র মহিলা গাড়ি থেকে নামলেন না। গাড়ির কালো গ্লাস একটু নামিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে স্যালুট গ্রহণ করলেন।
গাড়িতে বসেই মিনিট দু’য়েক কুশলাদি বিনিময় করলেন টিআই ও সার্জেন্টের সঙ্গে।   এডিসির গাড়িটি তখন রাস্তার উপর দাঁড় করানো। দু’মিনিটেই ট্রাফিক জ্যাম পৌঁছে গেলো ক্যামব্রিয়ান কলেজ পর্যন্ত। কিন্তু সেদিকে কারো মনোযোগ ছিল বলে মনে হলো না।

কুশলাদি বিনিময় শেষে কুড়িল বিশ্বরোডের দিকে চলে গেল এডিসিকে বহনকারী সাদা পাজেরোটি। এরপর ট্রাফিক সার্জেন্ট আবু মুসা ওয়াকিটকিতে কুড়িল ও যমুনা ফিউচার পার্কের দিকে বার্তা পৌঁছে দিলেন, ‘এডিসি ম্যাডাম নতুনবাজার থেকে কুড়িল অভিমুখে রওয়ানা দিয়েছেন’।

এডিসির প্রস্থানের পর আর মুহূর্তও দাঁড়ালেন না টিআই কিংবা সার্জেন্ট। তারা গল্প করতে করতে রাস্তা পার হয়ে পূর্ব পাশের (ভাটারা থানা সংলগ্ন) ট্রাফিক বক্সে চলে গেলেন। রয়ে গেলেন শুধু ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম।

এই ট্রাফিক কনস্টেবলের গা ঘেঁষে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়, জাবালে নূর, আকিক পরিবহন, তুরাগ, অনাবিল, সু-প্রভাত ও ভিক্টর পরিবহনের বাসগুলো। মাঝে মাঝে বাসগুলোকে চলে যাওয়ার তাড়া দেয়া হলেও গা করছিলেন না কেউ। আবার শুরু হয় অসহনীয় যানজট।

বাসের জন্য যারা অপেক্ষায় ছিলেন,  এদের মধ্যে যে লোকগুলো এতক্ষণ টিআই’র গুণকীর্তন করেছিলেন, তারা টিআই’র এই ভূমিকায় চরমভাবে হতাশা ব্যক্ত করলেন। কেউ গালমন্দ করতেও ছাড়লেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
এসআই/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।