ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চলছে ইউটিলিটি স্থানান্তর, মেট্রোরেলের মূল কাজ আগামী বছরে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
চলছে ইউটিলিটি স্থানান্তর, মেট্রোরেলের মূল কাজ আগামী বছরে ছবি: বাংলানিউজ

রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা সড়কের মাঝ বরাবর মেশিন দিয়ে কালো পিচের সড়ক কাটা হচ্ছে। এর একটু দূরেই বড় ক্রেনের সাহায্যে কালো পিচ, ইট, বালি ও  মাটি তুলে বিশাল গর্ত করা হচ্ছে।

ঢাকা: রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা সড়কের মাঝ বরাবর মেশিন দিয়ে কালো পিচের সড়ক কাটা হচ্ছে। এর একটু দূরেই বড় ক্রেনের সাহায্যে কালো পিচ, ইট, বালি ও  মাটি তুলে বিশাল গর্ত করা হচ্ছে।

সড়কের মাঝখানে বিশাল বিশাল দড়ির ব্যারিকেড দিয়ে চলছে এসব কাজ।  

ব্যারিকেডের মধ্যে হলুদ সাইনবোর্ডে লাল অক্ষরে লেখা ‘সাবধান, সাবধান, সাবধান, মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ চলছে। ১৩২ কেভি পাওয়ার ক্যাবল স্থানান্তরের কাজ চলছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত’।
 
এখানে কর্মরত অনেক কর্মী আবার সড়কের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের মতো দায়িত্ব পালন করছেন।  
 
শ্রমিক মোহাম্মদ রনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘তালতলা থেকে মিরপুর পর্যন্ত খোঁড়া হবে। রাস্তার মাঝ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানার কাজ করছি’।
 
মেট্রোরেলের রুটে মাটির নিচে ও ওপরে যেসব সঞ্চালন লাইন রয়েছে, সেগুলো সরানোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।  উত্তরা, মিরপুর হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে লম্বালম্বি ও আড়াআড়িভাবে বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের তার, পাইপসহ নানা সরঞ্জাম রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মিরপুরের পল্লবী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সেবা প্রতিষ্ঠানের লাইন স্থানান্তর করা হচ্ছে।  

তবে মেট্রোরেলের মূল কাজ শুরু হবে আগামী বছরের জুন মাসে।
 
প্রকল্পের পরিচালক মোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি সেবা খাতের লাইন আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা মিরপুর-১০ নম্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বিদ্যুতের লাইন স্থানান্তরের কাজ করছি। এরপর অন্যান্য ইউটিলিটিগুলো সরানো হবে’।  
 
প্রকল্প এলাকায় ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস), বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি (বিটিসিএল), ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথরিটি (ওয়াসা), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), গ্রামীণফোন, এমইএস, এসসিএল, এফঅ্যান্ডএইচ ও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নানা ইউটিলিটি লাইন পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র মিরপুর-১০ নম্বর থেকে আগারগাঁও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কে  নিচে ১২টির বেশি ইউটিলিটি লাইন আছে।  এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইন, গ্যাস লাইন, ঢাকা ওয়াসার ৩০০ মিলিমিটার ডায়াগ্রামের পানির লাইন, ডেসকোর ৩৩ কেভির বিদ্যুৎ লাইন, বিটিসিএলের ক্যাবল লাইনও রয়েছে। এগুলো পর্যায়ক্রমে স্থানান্তর করতে হবে বলেও জানান মোফাজ্জেল হোসেন।

সর্বসাধারণের জন্য গণপরিবহন সুবিধাদির আধুনিকায়নের জন্য ‘ঢাকা মাস ৠাপিড ট্রানজিট ডেভলপমেন্ট (ডিএমআরটিডি) বা মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৬ হাজার  ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
 
উত্তরা-পল্লবী-রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্ত্বর-তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে মেট্রোরেল।
 
মেট্রোরেলের স্টেশন সংখ্যা মোট ১৬টি। সেগুলো হচ্ছে-উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব এবং মতিঝিল। রুটের মোট দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার, রোলিং স্টক ২৪ সেট। প্রতি সেটে ৬টি করে কার থাকবে। ঘণ্টায় গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার এবং ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬ 
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।