ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদা ছাড়া চলে না লেগুনা (ভিডিও)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
চাঁদা ছাড়া চলে না লেগুনা (ভিডিও) ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

পাঁচ বছর ধরে লেগুনা চালান ড্রাইভার আলমগীর। এর মধ্যে তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে দু’বার। কারণ ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা না দেওয়া।

ঢাকা: পাঁচ বছর ধরে লেগুনা চালান ড্রাইভার আলমগীর। এর মধ্যে তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে দু’বার।

কারণ ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা না দেওয়া।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে এভাবেই বাংলানিউজকে বলছিলেন লেগুনা চালক আলমগীর।

তিনি বলেন, বিগত ৫ বছরে পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনা চালিয়েছেন। আর প্রতি পদে পদে তিনি পুলিশ সদস্যদের হয়রানির শিকার হয়েছেন। কখনোবা ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার পরও পুলিশ সদস্যরা জোর করে তাকে দিয়েছেন মামলা। আর সুখের জীবনটা কাঁটাতে হয়েছে অন্ধকার জেল খানায়। অতঃপর জামিনে ছাড়া পেয়ে বর্তমানে চলছে তার লেগুনার জীবন।

ফার্মগেট থেকে নিউমার্কেট রুটে লেগুনা চালান তিনি। বাংলানিউজকে বলেন, এ রুটে আমি এক বছর ধরে লেগুনা চালাই। রুটে মোট মোড় রয়েছে ৪টি। অর্থাৎ এ ৪টি সিগন্যালে ট্রাফিক পুলিশদের টাকা দিতে হয়। পান্থপথ, সিটি কলেজ, ঢাকা কলেজ ও নিলক্ষেত সিগন্যালে ট্রাফিক পুলিশদের টাকা না দিলে বন্ধ করে দেয় লেগুনা। সঙ্গে তো হয়রানি আছেই।  

নিউমার্কেটগামী যাত্রী হুমায়রা। মাঝে মাঝে তার সামনেই ট্রাফিক পুলিশরা লেগুনা থেকে টাকা নেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ফার্মগেট থেকে প্রতিদিন নিউমার্কেট যাতায়াত করি। কিন্তু কয়েকটি সিগন্যালে তাদেরকে নিয়মিত টাকা দিতে দেখি। কখনোবা টাকা না দিলে তারা যাত্রীও নামিয়ে দেয়।  
অন্যদিকে ফার্মগেট মোড় তথা আনন্দ সিনেমা হলের সামনে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশ রহুল ও আনসার সদস্য সজীব। আর এখানেই যেসব ট্রাফিক পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন তাদেরকেও চাঁদা দিতে হয়। না দিলে রাস্তায় কোনো লেগুনা দাঁড়াতে দেয় না।  

কথা হয় ফার্মগেট টু নিউমার্কেটগামী লেগুনার লাইনম্যান রানার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এখানে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদেরকে আমাদের নেতাকর্মীরা মাসোয়ারা দিয়ে থাকেন। না দিলে রাস্তায় কোনো লেগুনা দাঁড়াতে দেয় না। শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে ট্রাফিক পুলিশদের উৎপাত বেড়ে যায়। টাকার দরকার হলেই তারা ১০ বা ২০ টাকার জন্য আমাদের হয়রানি করা শুরু করে দেয়।

এ বিষয়ে ফার্মগেট মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ রহুল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কোনো ধরনের চাঁদা বা মাসোয়ারা নেই না। তবে মাঝে মাঝে তারা আমাদেরকে খুশি হয়ে চা পান খেতে কিছু দেয়। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্কটাও ভালো থাকে।  

আপনারা নাকি জোর করে চাঁদা নেন প্রশ্নে রেগে গিয়ে তিনি বলেন, তারা টাকা কামাবে আর আমাদের দিবে না, তা কি হয়? এজন্য তো আমরা রাস্তায় যানজট দেখেও না দেখার ভান করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এসজে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।