ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজকে সরকারি করার দাবিতে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা: ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজকে সরকারি করার দাবিতে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কলেজের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাসহ ওই এলাকার সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।

ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারিকরণ দাবি আদায় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপিক এস এম আবদুল হাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ৩০ জন বক্তা বক্তৃতা করেন।

বক্তারা জানান, ৪৪ বছরের পুরোনো ফুলবাড়ীয়া কলেজটি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উপজেলা সদরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কলেজটিতে পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) এবং সাতটি বিষয়ে অনার্স কোর্সে অধ্যয়ন করছেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এখানে চালু আছে এইচএসসি এবং ডিগ্রি প্রোগ্রাম।

কলেজটিতে প্রয়োজনীয় এবং আকর্ষণীয় অবকাঠামো রয়েছে। তিন একরসহ কলেজটি উপজেলার শ্রেষ্ঠ ও প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ।

কলেজটির সরকারিকরণের লক্ষ্যে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি পরিদর্শক দল সরেজমিনে পরিদর্শন করে সন্তোষজনক প্রতিবেদন দাখিল করেন।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকারিকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার সকল শর্তই পূরণ করে যখন কলেজটির সরকারিকরণ চূড়ান্ত পর্যায়ে-ঠিক সেই মূহুর্তে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. মোসলেম উদ্দিন অ্যাডভোকেট, তার পুত্র অ্যাডভোকেট মো. ইমদাদুল হক সেলিম এবং বির্তকিত অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন খানের কারসাজির কারণেই সরকারিকরণের তালিকা থেকে বাদ পড়ে ফুলবাড়ীয়া কলেজ।

বক্তারা বলেন, খুবই বিস্ময়ের ব্যাপার ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, মাত্র সাত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এমপিও বিহীন উচ্চমাধ্যমিক বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ, যেখানে মাত্র ২০০ জন ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। দুর্বল অবকাঠামো, উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অজপাড়াগাঁয়ে অবস্থিত উপজেলার সবচেয়ে নবীন কলেজ, সরকারিকরণের কোনো শর্তই যে কলেজটি পূরণ করতে পারেনি, সে কলেজটিকে সরকারিকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, এই কলেজটির অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান হীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শিবিরের ক্যাডার হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার করেছিল। বর্তমানে তিনি জামায়াতের একনিষ্ঠ কর্মী। জামায়াতের একজন কর্মী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, সেই কলেজটি জাতীয়করণ হয় কিভাবে- প্রশ্ন রাখেন বক্তারা।

বক্তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় এমপি একজন স্বাধীনতাবিরোধী লোক হিসেবে চিহ্নিত। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলাও করেছেন। তারা আরো অভিযোগ করেন, নন এমপিওভুক্ত একটি মহিলা কলেজকে সরকারিকরণের মাধ্যমে এমপি মোসলেম উদ্দিন শিক্ষক নিয়োগের নামে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বক্তারা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় বক্তৃতা দেন ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক, নূরুল ইসলাম, আবদুর জব্বার, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তালুকদার ও অ্যাডভোকেট আবদুল কুদ্দুস, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন,  পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফজলুল কাদের বুলবুল, শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, কৃষক লীগের আহ্বায়ক নূরুল ইসলাম বিএসসি, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আলম লিটন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এটিএম মহসিন শামীম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াসেক বিল্লাহ শামীম, ফুলবাড়ীয়া কলেজ সরকারিকরণ দাবি আদায় কমিটির সচিব অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, অধ্যাপক রুহুল আমিন, অধ্যাপক ইউনুস আলী, অধ্যাপক রুহুল আমিন বিএম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি এবি সিদ্দিক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।