ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টাকা নিয়ে উধাও পাসপোর্ট অফিসের দালালরা! (ভিডিও)

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
টাকা নিয়ে উধাও পাসপোর্ট অফিসের দালালরা! (ভিডিও) ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

১৫ দিনে পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছ‍ুড়ে দিয়ে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এক দালাল। দেড় মাস পার হয়ে গেলেও মেলেনি আকরাম চৌধুরী (২৫) নামে একব্যক্তির পাসপোর্ট। এটি একটি ঘটনা।

ঢাকা: ১৫ দিনে পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছ‍ুড়ে দিয়ে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এক দালাল। দেড় মাস পার হয়ে গেলেও মেলেনি আকরাম চৌধুরী (২৫) নামে একব্যক্তির পাসপোর্ট।

এটি একটি ঘটনা।

ঘটনা-২ হচ্ছে, ছেলে আজিজুল ইসলামের পাসর্পোট করাতে দালালদের কাছে দুই দফায় ১৬ হাজার টাকা দিয়েছেন তার মা মোসা. শাহানাজ বেগম। ১৮ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনও পাসপোর্ট হাতে দেননি দালাল মালেক ও রবিন।

আর ঘটনা-৩ হলো, নতুন পাসপোর্ট করাতে এসেছেন মাহবুবুর রহমান। ফরম পূরণ করে দালালের মাধ্যমেই তা জমা দিয়েছেন। অপেক্ষা করছেন ছবি তোলার জন্যে। ছবির লাইনে না দাঁড়িয়ে, অপেক্ষা করছেন বাইরে বসেই। দালাল ডাকলেই ভেতরে যাবেন ছবি তুলতে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দালালদের এমন দৌরাত্মের চিত্রই দেখা গেছে। যেনো দালাল চক্রেরই আধিপত্য চলছে সেখানে।
 
ভুক্তভোগীরা বলছেন, পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষদের ভয়ভীতিও দেখান দালালরা। অফিসের কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই এসব কাজ করছে দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

শুধু তাই নয়, এসব দালাল চক্রের সদস্যদের সঙ্গে রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রের সদস্যদেরও যোগাযোগ রয়েছে। আঞ্চলিক অফিস থেকে কোনো ফাইল আগারগাঁও অফিসে পাঠানো হলে সেই ফাইলের জন্যও লোক পাঠায় তারা।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) রায়েরবাগের মুজাহিদনগরে অবস্থিত যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে এসেছেন দক্ষিণগাঁও এর নয়নতারা এলাকার আকরাম চৌধুরী।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘১৫ দিনে পাসপোর্ট করিয়ে দিবে এমন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শ্যামল নামের এক দালাল ১২ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু দেড় মাস চলে গেছে আমি এখনও পাসপোর্ট হাতে পাইনি। ’

আকরাম বলেন, ‘ওই শ্যামলকে ফোন দিলে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গত ৫ দিন ধরে তার কোনো দেখাও পাই না, খোঁজও পাই না। ’  

তিনি অভিযোগ করেন, এখানে দালালরা রীতিমতো সাধারণ মানুষদের ভয়ভীতি দেখায়। তারা বলে নিজে নিজে করলে ৩ মাসেও পাসপোর্ট হাতে পাবেন না। আমরা করে দিলে ১৫ দিনে পাসপোর্ট পাবেন।

‘অনেকেই নতুন কিংবা কমশিক্ষিত লোকজন আসেন, কিছু বোঝেন না তারা, আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে দালালরা। ’

ছেলের পাসপোর্ট করতে আসা শাহানাজ বেগম বলেন, দুই দফায় ১৬ হাজার টাকা দিয়েছি। যাত্রাবাড়ীতে মালেক আর রবিনকে ১০ হাজার আর আগারগাঁও অফিসের ওই খানে সাইফুলকে দিছি ৬ হাজার টাকা। কিন্তু পাসপোর্ট পাই নাই।

‘খালি টাকাই নিছে কিন্তু কাজ করে নাই দালালরা,’ অভিযোগ করেন তিনি।

স্থানীয় এক দোকানি বলেন, এখানে যারা দালালি করে তারা এখানকার স্থানীয়। আমার দোকানেও বসে মাঝে মাঝে তারা লেনদেন করে।

‘দালালদের সঙ্গে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যের যোগসাজশ রয়েছে। এখানে আসা সাধারণ মানুষদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তারা এসব কাজ করছে। পুলিশ থাকলেও তারা কিছুই বলে না’- বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দোকানি।

তবে এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এসজেএ/এমএ/টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।