ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘জরুরি হলে ঢাকা মেডিকেল যান’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
‘জরুরি হলে ঢাকা মেডিকেল যান’ ছবি- রানা- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

চোখের ডাক্তার দেখাবেন বলে সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন সোহেল রানা। বেলা ১১টা বাজলেও টিকিটে নির্ধারিত কক্ষে ডাক্তার নেই। দুই ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে বিরক্ত হয়ে তিনি আবার গেলেন কাউন্টারে। 

ঢাকা: চোখের ডাক্তার দেখাবেন বলে সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন সোহেল রানা। বেলা ১১টা বাজলেও টিকিটে নির্ধারিত কক্ষে ডাক্তার নেই।

দুই ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে বিরক্ত হয়ে তিনি আবার গেলেন কাউন্টারে। সেখানে ‘ডাক্তার নেই’ বলার সঙ্গে সঙ্গে তাকে জানানো হলো- ‘অপেক্ষা করেন, ডাক্তার আসবেন। ’ 

কতক্ষণ অপেক্ষা করবো? সোহেল রানার এমন প্রশ্নের জবাবে কাউন্টার থেকে সরাসরি উত্তর- ‘জরুরি হলে ঢাকা মেডিকেল যান’।
 
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে মুগদা ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেলো।
 
সোহেল রানার টিকিটে দেখা যায়, ৩০৫ নং কক্ষে ডাক্তার দেখানোর নির্দেশনা আছে। অথচ সেখানে সকাল থেকেই ডাক্তার অনুপস্থিত। তৃতীয় তলারই ৩১৭ নং কক্ষেও চোখের রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য তিনি কক্ষের নাম্বার পরিবর্তন করাতে এসেছিলেন।
 
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় বহির্বিভাগের কাউন্টারের ভেতর থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, রুমের নাম্বার চেঞ্জ (পরিবর্তন) করা যাবেনা। আমরা শুধু টিকিট দেই। আপনার অভিযোগ থাকলে ৪র্থ তলায় পরিচালকের রুম, সেখানে যান। এতো জরুরি হলে ঢাকা মেডিকেলে যান।
 
সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, ওপর থেকে বলা হলো আপনি নিচ থেকে রুমের নাম্বারটা চেঞ্জ করে আনেন, তাই আসলাম। এখানে আসার পর দেখলেনতো কি ব্যবহারটা করলো। ডাক্তার না থাকলে আগে বলে দিতো। আমরা কতোক্ষণ অপেক্ষা করবো?
 
হাত ব্যথা নিয়ে গত ৮ নভেম্বর বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী সেলিনা। সে সময় কয়েকটি পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়। তারপর পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে গত তিনদিন ধরে বহির্বিভাগে ঘুরছেন, কিন্তু ডাক্তারের দেখা পাচ্ছেন না।
 
বহির্বিভাগের ২য় তলায় অর্থোপেডিক্সের একটি কক্ষের সামনে রোগীর দীর্ঘলাইন থাকলেও সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ডাক্তার অনুপস্থিত। ডাক্তার কোথায়, জানতে চাইলে নার্স বলেন, স্যার রাউন্ডে আছে।
 
এদিন সরেজমিনে দেখা যায়, বহির্বিভাগে গাইনী, শিশু, অর্থোপেডিক্স, মেডিসিনসহ বেশ কয়েকটি বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য নির্ধারিত কক্ষের সামনে রোগীরা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু সেসব কক্ষে ডাক্তারদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
 
আবার অনেকেই কয়েকদিন ধরে এসেও কাঙ্ক্ষিত ডাক্তারের দেখা পাননি। ডাক্তার কখন আসবেন এ বিষয়েও সঠিক কোনো নির্দেশনা পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
 
ডাক্তারের অভাব যখন দৃশ্যমান তখন হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ডাক্তারের স্বল্পতা নেই, কিছুটা সমন্বয়ের অভাব।

এ সময় তিনি বাংলানিউজ টিমের সামনে কাউন্টারে দায়িত্বরতদের ডেকে পাঠান। যে রুমে ডাক্তার নেই সেই রুমের টিকিট কেন দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তারা জানান, কোন রুমে ডাক্তার নেই সেই তথ্য তাদেরকে জানানো হয়নি।
 
তৎক্ষণিক তিনি ডাক্তারদের ছুটির বিষয়ে কাউন্টারে অবগত করতে বলেন এবং নিয়মিত দায়িত্বরতদের পরিদর্শনের নির্দেশ দেন।
 
এরপর আজিজুন নাহার বলেন, এ সময়টাতে অনেক ডাক্তার ছুটিতে যান। কিন্তু সেসব ছুটির তথ্য কাউন্টারে জানানো হয়নি বলে এ সমস্যা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।