ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গড়ুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত গড়ুন

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মুক্ত শান্তিপূর্ণ দেশ গড়তে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।

ঢাকা: সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মুক্ত শান্তিপূর্ণ দেশ গড়তে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।


 
বিভাগের ১১টি জেলার ৭ হাজার ৫০৯টি স্থান থেকে অন্তত ২৩ লাখ ২৭ হাজার মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
 
সূচনা বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি স্থানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
 
আরও পড়ুন : সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক স্বল্পতা দূর করার নির্দেশ

অনুষ্ঠানের শুরুতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সরকারের উন্নয়ন বিষয়ে আলাদা আলাদা ভিডিও দেখানো হয়।

এরপর বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ রয়েছেন, সেই সঙ্গে আমাদের প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। সকলে সম্মিলিতভাবে এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।  
 
“মানুষকে বোঝাতে হবে এই পথ শান্তির পথ নয়। এই পথ নিরাপদ পথ নয়। আমরা কল্যাণের পথে থাকতে চাই। ”
 
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলে মেয়েরা কার সঙ্গে মেশে, কোথায় যায় তার খোঁজ রাখুন। তারা যেন সঠিক পথে থাকে।
 
“ছেলে মেয়েরা যেন মন খুলে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করুন। ”
 
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনো ছেলে পেলে অনুপস্থিত থাকলে তারা কী করছে, তারা কোনো সন্ত্রাসীর সঙ্গে মিশছে কিনা, মাদকে আসক্ত হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর দিন। সেখান থেকে ছেলে-মেয়েদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।  
কোরআন-হাদিসে বর্ণিত ইসলামের শান্তির বাণী বারবার জনগণের সামলে তুলে ধরতে ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
 
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ। এখানে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না।
 
আরও পড়ুন: ** ‘ভিক্ষা এনে লুটেপুটে খাওয়া বিএনপির নীতি’​

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের বিপথে নিয়ে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের সময় শুরু হয় সন্ত্রাসের আনাগোনা, অস্ত্রের ঝনঝনানি। কোমলমতি ছেলেদের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র, অর্থ আর মাদক।
 
যারা বাসায় এসে মোড়া পেতে বসতো, তারা ফোন ধরে না
বিগত সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজে খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলাম। তাকে চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলাম। আমি ফোন করেছি ১০টায়, বারবার ফোন করেছি। সন্ধ্যা ৬টায় ওনার টেলিফোন ধরার সুযোগ হলো।
 
“কী ভাষা ব্যবহার করেছে সে কথা আর বললাম না। যারা একদিন আমাদের বাসায় এসে মোড়া পেতে বসে থাকতো। আর তারা ফোন করলে ফোন ধরে না। এটাই হলো দুর্ভাগ্য। ”
 
বিএনপি নির্বাচনে না এসে ভুল করেছে, তার খেসারত জনগণ দেবে কেন? এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়াকে বলেছিলাম আসেন আমরা সর্বদলীয় সরকার গঠন করি। একসঙ্গে নির্বাচন করি। খালেদা জিয়া আমার আহ্বান সাড়া দেননি। নির্বাচন বর্জন করলো।  
বিএনপির আন্দোলন মানে মানুষ হত্যা মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে, ২০১৫ সালে সরকার উৎখাতের নামে বিএনপি টানা ৯২ দিন নৈরাজ্য চালিয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, বাস, ট্রেন অগ্নিসংযোগ করেছে। নিরীহ গুরুও রেহাই পায়নি তাদের হাত থেকে।
 
তিনি বলেন, এ রকম বীভৎস ঘটনা ৭১ সালে হানাদার বাহিনী আর দেখেছি খালেদা জিয়াকে করতে।
 
“মা দেখে তার চোখের সামনে স্বামী, সন্তান পুড়ে মরছে, বাবার চোখের সামনে ছেলে পুড়ে মরেছে। ”
 
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৯২ দিন গুলশান অফিসে বসে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে আর বিরিয়ানির প্যাকেট খেয়েছে।
 
আরও পড়ুন: ** যারা একদিন বাসায় এসে বসে থাকতো, ফোন করলে তারা ধরে না!
সর্বসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাদা আলাদাভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন এবং সমুদ্র মৎস্য গবেষণা ও অনুসন্ধান জাহাজ এমভি মিন সন্ধানী’র কমিশনিং প্রদান করেন।
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়া সবাইকে তার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
 
আরভি মিন সন্ধানী জাহাজ প্রসঙ্গে বলেন, এ জাহাজ সমুদ্রের কোথায় মৎস্য সম্পদ আছে তা নির্ণয় ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অন্য সমুদ্র সম্পদ নষ্ট না করে কীভাবে সমুদ্র সম্পদকে আহরণ করা যায় তার কৌশল নির্ণয়ে ভূমিকা রাখবে।
 
গণভবন ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।