ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘ভিক্ষা এনে লুটেপুটে খাওয়া বিএনপির নীতি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
‘ভিক্ষা এনে লুটেপুটে খাওয়া বিএনপির নীতি’

দেশ ও মানুষের কল্যাণের সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, মানুষের ভাগ্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ে যেতে চাই।

ঢাকা: দেশ ও মানুষের কল্যাণের সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, মানুষের ভাগ্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ে যেতে চাই।
 
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।


 
বিভাগের ১১টি জেলার ৭ হাজার ৫০৯টি স্থান থেকে অন্তত ২৩ লাখ ২৭ হাজার মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
 
সূচনা বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি স্থানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
 
অনুষ্ঠানের শুরুতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সরকারের উন্নয়ন বিষয়ে আলাদা আলাদা ভিডিও দেখানো হয়।

এরপর বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের এবং মানুষের উন্নতি হয় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর বাংলাদেশের মানুষ বঞ্চিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত ছিলো।

“২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন মানুষ প্রথম উপলদ্ধি করে সরকার মানুষের জন্য কাজ করে। ”
 
খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, গবেষণা, নারীর শিক্ষা, ক্ষমতায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ, রির্জাভ বৃদ্ধি, মাথা পিছু আয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। সেভাবে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই।  
রাতারাতি আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে তারা 
পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো, তারা নিজেদের ভাগ্য গড়তেই ব্যস্ত ছিলো- মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, রাতারাতি তারা আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে।
 
বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, ’৮১ সালে জিয়ার মৃত্যুর পর আমরা শুনেছি, টেলিভিশনে ৪০দিন পর্যন্ত দেখানো হয়েছে, জিয়া কিছুই রেখে যাননি তার পরিবারের জন্য। একখানা ভাঙা সুটকেট আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া।
 
“যাদের জীবন ওই ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি দিয়ে শুরু তারা ক্ষমতায় এসে রাতারাতি অর্থ সম্পদের মালিক হয় কীভাবে?”
 
তিনি বলেন, এরা নিজেদের ভাগ্য গড়া, মানিলন্ডারিং করা, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা, হত্যাকাণ্ড চালানো, মানুষকে খুন করা, মানুষ হত্যা- এই কাজেই পারদর্শী ছিলো, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নয়।
 
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি তখন বিএনপির বক্তব্য ছিলো দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয়। তাহলে বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না।  
 
“বিএনপির নীতি ছিলো বাংলাদেশকে দরিদ্র রেখে ওই দরিদ্র মানুষকে দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে ভিক্ষে নিয়ে আসবে আর নিজেরা লুটেপুটে খাবে। ”
 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে, প্রতিটি মানুষ পেট ভরে খাবে। আমরা তা করতে পেরেছি।
 
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের সফলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা ১৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এখন নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের দিকে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।
 
বিএনপির শাসনামলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষকে দিয়েছে খাম্বা, কারণ খালেদা জিয়ার ছেলে ইন্ডাস্ট্রি করেছিলো পঞ্চগড়ে। সঞ্চালন করার বিদ্যুৎ হয়নি, কিন্তু খাম্বা কিনে রাস্তার পাশে ফেলে রাখতো।
 
সর্বসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাদা আলাদাভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন এবং সমুদ্র মৎস্য গবেষণা ও অনুসন্ধান জাহাজ এমভি মিন সন্ধানী’র কমিশনিং প্রদান করেন।
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়া সবাইকে তার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
 
আরভি মিন সন্ধানী জাহাজ প্রসঙ্গে বলেন, এ জাহাজ সমুদ্রের কোথায় মৎস্য সম্পদ আছে তা নির্ণয় ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অন্য সমুদ্র সম্পদ নষ্ট না করে কীভাবে সমুদ্র সম্পদকে আহরণ করা যায় তার কৌশল নির্ণয়ে ভূমিকা রাখবে।
 
গণভবন ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।