ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে বাড়ছে মাল্টা চাষ

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
বরিশালে বাড়ছে মাল্টা চাষ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মাল্টা চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ধান-নদী-খালের অঞ্চল বরিশালের কৃষকরা। এ অঞ্চলে মাল্টা চাষ শুরুর দুই বছরের মাথায় ভালো মানের ফলন পাওয়ায় এ আশা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

বরিশাল: মাল্টা চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ধান-নদী-খালের অঞ্চল বরিশালের কৃষকরা। এ অঞ্চলে মাল্টা চাষ শুরুর দুই বছরের মাথায় ভালো মানের ফলন পাওয়ায় এ আশা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, মাল্টা চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এ অঞ্চলে মাল্টায় তেমন কোনো রোগ-বালাই নেই। এছাড়া মাল্টা চাষাবাদের খরচও অনেক কম।

পাশাপাশি মাল্টা গাছের সঙ্গে ভিয়েতনামি জাতের নারকেলের চারা রোপণ করার সুযোগ রয়েছে। যা থেকে একইসঙ্গে বাড়তি অর্থ পাবেন কৃষকরা।

বরিশাল কৃষি অফিস সূত্র জানায়, দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের (এসসিডিপি) আওতায় ২০১৪ সালে বরিশাল জেলা সদর, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুরসহ ৫ উপজেলায় প্রথমে বারি মাল্টা-১ গাছের পরীক্ষামূলক চারা রোপণ করা হয়। পরে ১০টি উপজেলায় প্রায় ১ হাজার মাল্টা গাছের চারা রোপণ করা হয়। এসব খেতে মাল্টা গাছে মাঝে মাঝে ভিয়েতনামি উচ্চ ফলনশীল জাতের নারকেল গাছের চারা লাগানো হচ্ছে চলতি বছরে।

পরীক্ষামূলক এ প্রকল্পের বাবুগঞ্জ উপজেলার ৪নং ওয়ার্ডে খানপুরায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. রহিম সরদারের প্রদর্শনী প্লটের ‍গাছে ভালো ফল ধরেছে। তার বাগানের  একটি গাছেই ১৪৮টি মাল্টা ধরেছে। এখানে ৬০টির মতো গাছ রয়েছে। ২০১৪ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা অফিসের কর্মকর্তার সহায়তায় স্থানীয় হার্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে এসব চারা রোপণ করেন তিনি।

আরেক মাল্টি চাষি মুক্তিযোদ্ধা মো. রহিম সরদার জানান, এবার তো ফল হয়েছে যে কল্পনা করতে পারেনি কেউ। আর এগুলো আমদানি করা মাল্টার মতো পানসে নয়। খেতে মিষ্টি সুস্বাদু।

তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে গাছ আনার পর তিনি পটাশিয়াম ও টিএসপি সার ব্যবহার করেছেন। তবে নিজ উদ্যোগে গোবরের মিশ্রণে তৈরি জৈব সারই বেশি ব্যবহার করেছেন। ফলে কোনো রোগ-বালাই হয়নি। তাই তেমন কোনো খরচও হয়নি।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাম্মৎ মরিয়ম বলেন, শুরুর দিকে মাল্টা চাষ নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এখন এ অঞ্চলে মাল্টা চাষের প্রসার ঘটানো খুবই সহজ। ‍একজন চাষি এবার একটি গাছে ১৪৮টি ফল পেয়েছেন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা। অথচ বছরে একবার ফলনশীল একটি গাছের পেছনে ১ হাজার টাকাও খরচ হয় না।  

তিনি জানান, নিয়মিত প্রদর্শনীর মাধ্যমে মাল্টা চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এজন্য দুইটি মাল্টা গাছের মধ্যে একটি করে ভিয়েতনামি নারকেল উপি-১ গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এ নারকেল গাছ ৫-৬ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয় ও কয়েকবছরের মধ্যেই ফলন দিতে শুরু করে।  

মাল্টা চাষ নিয়ে বরিশাল জেলা কৃষি অফিসের উপপরিচালক রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ বাংলানিউজকে বলেন, বরিশাল অঞ্চলে মাল্টা চাষের শুরুতে সফলতা পাওয়া গেছে। এর প্রসারের রক্ষে কৃষি অফিস কাজ করে যাবে। অল্পদিনেই মাল্টার বাণিজ্যিক ফলন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
এমএস/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।