ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ধান কাটা ১২০০ টাকা বিঘা, মাড়াই ৫০০

সজিব তৌহিদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
ধান কাটা ১২০০ টাকা বিঘা, মাড়াই ৫০০ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে চলছে আমন ধান কাটার মৌসুম। আর এ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও গৃহস্থরা।

কুড়িগ্রাম (ভূরুঙ্গামারী) থেকে ফিরে: দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে চলছে আমন ধান কাটার ধুম। আর এ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও গৃহস্থরা।

চলতি সপ্তাহজুড়ে জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাসানী পাড়া, দক্ষিণ ছাট গোপালপুর, মাদ্রাসা পাড়া, বকুলতলা, দিয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে গিয়ে পাকা আমন ধান কাটার দৃশ্য চোখে পড়ে।

গ্রামের কৃষকরা গৃহস্থের কাছ থেকে চুক্তি নিয়ে ধান কাটছেন। এ মৌসুমে কৃষকরা দল বেঁধে ধান কাটার চুক্তিতে নামেন। এ অঞ্চলে চলতি মৌসুমে বিঘাপ্রতি (৩২ শতাংশ) ধান কাটা ১২০০ টাকা এবং মেশিনে মাড়াই খরচ ৫০০ টাকা।

ভাসানী পাড়া গ্রামের এক জমিতে বাপ-বেটা মিলে ধান কাটতে দেখা গেলো। বাবা মমিন শিকদার (৪০) একজন দিনমজুর কৃষক। অন্যের জমিতে বা বাড়িতে কাজ করেই হয় তার রুটি-রুজির ব্যবস্থা। ছেলে আশরাফুল শিকদার (১৬) এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রায়ই তাকে তার বাবার চুক্তিভিত্তিক কাজে সাহায্য করতে হয়।

এ গ্রামের গৃহস্থ ইউনূস আলীর আধা বিঘা জমির ধান কাটার চুক্তি নিয়েছেন মমিন শিকদার। সারাদিন বাপ-বেটা আধাবিঘা জমির ধান কেটে সাবাড় করেছেন। সেই ধান দুই-একদিন খেতে শুকিয়ে গৃহস্থের বাড়িতে পৌঁছে দিলেই ৬০০ টাকা ওসুল।

তারপর অন্য একটি গ্রুপ এসে মেশিনে ধান মাড়াই করে দেবে। তারা পাবে ২৫০ টাকা। এভাবেই বর্তমানে চলছে গা‍ঁও-গ্রামের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের প্রক্রিয়া। অবশ্য কয়েক বছর আগে যেসব কৃষক ধান কাটতেন, তাদেরই ধান মাড়াইয়ের কাজটা সারতে হতো।

বর্তমানে কৃষিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ধানা কাটা ও ধান মাড়াই দু'টি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটি পক্ষ শুধু ধান কেটে গৃহস্থের বাড়িতে পৌঁছে দেয়, অন্যপক্ষ শুধু মেশিনের মাধ্যমে ধান মাড়াইয়ের কাজ করে।

দিনমজুর কৃষক মমিন শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, 'এহন ধান কাটার কামই বেশি, তাই চুক্তি নিয়া ধান কাটতাছি। অন্য সময় কামলা দেই। গৃহস্থের  বাড়িতে যহন যে ধরনের কাম পাই, ওই কামই করি। '

ভাসানী পাড়া গ্রামের গৃহস্থ ইউনূস আলী বলেন, 'আজকাল কৃষিকাজে লাভ নাই। সবকিছুর দাম বেশি। কৃষকের মূল সম্পদ ধান। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাজারে সেই ধানের দামই নাই। জমি তো আর পতিত রাখুন যায় না, তাই উপায় না পাইয়া চাষাবাদ করুন লাগে। '

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।