ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু সুরক্ষা কার্ডের প্রচলন হচ্ছে খুলনার দাকোপে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬
শিশু সুরক্ষা কার্ডের প্রচলন হচ্ছে খুলনার দাকোপে ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশে সবচেয়ে বাল্যবিয়ে প্রবণতা দেখা যায় খুলনা দাকোপ উপজেলায়। এ কারণে বাল্যবিয়ে বন্ধে এক নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এ উপজেলায়।

খুলনা: বাংলাদেশে সবচেয়ে বাল্যবিয়ে প্রবণতা দেখা যায় খুলনা দাকোপ উপজেলায়। এ কারণে বাল্যবিয়ে বন্ধে এক নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এ উপজেলায়।

আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) থেকে দাকোপ উপজেলায় কিশোরীকে সুরক্ষা কার্ড প্রচলন হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সী পর্যন্ত অধ্যয়নরত, কর্মজীবী ও ঝরে পড়া সব কিশোরীকে এ কার্ড দেওয়া হবে।

ওই দিন থেকে দাকোপে কোনো কিশোরীকে বিয়ে দিতে হলে ওই কার্ড প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। বাংলাদেশে কিশোরী সুরক্ষা কার্ডের এমন উদ্যোগ এটাই প্রথম। দাকোপ উপজেলাতেই দেশের মধ্যে প্রথম এ উদ্যোগ নেওয়া হলো।

খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের নির্দেশনায় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউনিসেফের সহযোগিতায় দাকোপ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মৃণাল কান্তি দে’র তত্ত্বাবধানে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের সমাজভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কর্মসূচির কর্মীরা এই কার্ড তৈরি করেছেন।

এ কাজে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষকমণ্ডলী, ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান ও সচিবরা এবং উদ্যোক্তরাও যথাযথ সহায়তা করেছেন।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রূপান্তরের তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।

খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান এক বৈঠকে এ ধরনের কার্ড তৈরির প্রস্তাব করলে রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ এবং ইউনিসেফ, খুলনার চিফ অব ফিল্ড অফিস মো. কফিল উদ্দিন এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে খুলনা জেলার বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা দাকোপের কিশোরীদের সুরক্ষার জন্য এ কার্ড প্রস্তুতের উদ্যোগ নেন।

কিশোরী সুরক্ষা কার্ডে কিশোরীর নাম, রঙিন ছবি তার জন্ম তারিখ, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, মায়ের নাম, বাবার নাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঠিকানা দেওয়া থাকছে বলেও জানান আব্দুল হালিম।

তিনি আরও বলেন, রূপান্তরের সমাজভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কর্মসূচির কর্মীরা তাদের কর্ম এলাকার উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ থেকে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীদের ডাটাবেজ তৈরি করার কাজের পাশাপাশি কমিউনিটি থেকে অনূর্ধ্ব ১৮ বয়সী কিশোরীদের তালিকা সংগ্রহ ও ডাটাবেজ তৈরি করে। সেই সঙ্গে এ সব কিশোরীদের ছবি তোলা, কার্ডের ডিজাইন চূড়ান্ত করা এবং গুণগত মানসম্পন্ন কার্ড মূদ্রণের কাজ সম্পাদন করে।

দাকোপ উপজেলার সর্বমোট ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ) এবং কর্মজীবী ও ঝরে পড়া ছয় হাজার তিনশ’ ছয় জন কিশোরীর ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের মধ্যে কিশোরী সুরক্ষা কার্ড বিতরণ করা হবে। বিকেল ৩টায় চালনা পৌরসভা মিলনায়তনে এ কার্ড বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৯শ’ কিশোরীর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্ড বিতরণ করা হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৃণাল কান্তি দে, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, পৌরসভার মেয়র সনৎ কুমার বিশ্বাস এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিশোরী বিয়ের ন্যূনতম বয়সসীমা অতিক্রম করবে এবং বালিকা বয়স থেকে কিশোরী বয়সে পদার্পণ করবে। এ প্রক্রিয়াকে চলমান করা না গেলে এ কার্ডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে বলে এলাকার মানুষদের ধারণা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৬

এমআরএম/এএটি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।