ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত দিবস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৬
৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত দিবস ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার রফিকুল হায়দার চৌধুরী ও অধ্যক্ষ মুনসুরুল হকের নেতৃত্বে শত্রু মুক্ত হয় লক্ষ্মীপুর। নয় মাসে অর্ধ-শতাধিক খণ্ড যুদ্ধে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

লক্ষ্মীপুর: ৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার রফিকুল হায়দার চৌধুরী ও অধ্যক্ষ মুনসুরুল হকের নেতৃত্বে শত্রু মুক্ত হয় লক্ষ্মীপুর।

নয় মাসে অর্ধ-শতাধিক খণ্ড যুদ্ধে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

দিনটি একদিকে যেমন ছিল বিজয়ের আনন্দের, অন্যদিকে ছিল স্বজন হারানো বেদনার। নয় মাস যুদ্ধ চলাকালে জেলার রামগতি, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধ-শতাধিক খণ্ড যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে রামগঞ্জ-মীরগঞ্জ সড়কে ১৭ বার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড কাউন্সিল শহীদদের কবর জিয়ারত ও মোনাজাত, র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।

যুদ্ধে লক্ষ্মীপুর জেলায় ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক লোক শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩ জন, রামগতিতে ২জন, কমলনগর ১জন, রায়পুরে ৭জন ও রামগঞ্জে ২জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

এছাড়াও শতাধিক পাকবাহিনীর সদস্য এবং পাঁচ শতাধিক রাজাকার নিহত হয়। তম্মধ্যে বাগবাড়ি মাদাম ব্রিজের পাশে ৭০ জন পাকসেনা যুদ্ধে মারা যায়। এপ্রিলের শেষ দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সর্ব প্রথম লক্ষ্মীপুরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেয়ে শহরে ঢোকার মাদাম ব্রিজটি ভেঙে দেয়। হানাদর বাহিনী শহরে ঢুকতে না পেরে মাদাম ব্রিজের নীচ দিয়ে নৌকায় করে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার রফিকুল হায়দার চৌধুরী ও অধ্যক্ষ মুনসুরুল হকের নেতৃত্বে অকুতোভয় কয়েকজন যুবক এসময় মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। তাদের কাছে ছিল ৫টি রাইফেল ও ৫টি গ্রেনেড। এরপর ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নেন আ ও ম শফিক উল্যা, তোফায়েল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, হামদে রাব্বী, ফিরোজ আলমসহ কয়েকজন। তারাও মাস্টার রফিকের সঙ্গে যোগ দেন। এরপর জেলার বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক সেনাদের বিরুদ্ধে মরণজয়ী যুদ্ধ শুরু করেন।

মে মাসের শেষ দিকে পাকসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধের পর লুধূয়া গ্রামের একটি পুকুরের কচুরিপানার ভেতর থেকে পাকাসেনাদের ফেলে যাওয়া ১টি রকেট ল্যাঞ্চার, ৭টি চাইনিজ রাইফেল, ১টি এলএমজি, ৭ হাজার গুলি উদ্ধার করা হয়। এ অস্ত্রের সাহায্যে তারা শত্রুদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

যুদ্ধচলাকালীন পাকসেনারা বাগবাড়ির একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে টর্চার সেলে অসংখ্য নারী-পুরুষকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। পরে এসব মরদেহ পার্শ্ববর্তী বাগবাড়ি গণকবরে পুঁতে রাখে। সবশেষে ৪ ডিসেম্বর শহরের বাগবাড়ির পশ্চিম দিক থেকে হাবিলদার আবদুল মতিন ও উত্তর দিক থেকে রফিক স্যারের নেতৃত্বে যুদ্ধ শুরু হলে এ সময় শতাধিক রাজাকার আত্মসমর্পণ করলে শত্রু মুক্ত হয় লক্ষ্মীপুর।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।