ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

টাম্পাকো ট্রাজেডি

ডিএনএ টেস্টে অপেক্ষার প্রহর, লাশ চায় স্বজনরা

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
ডিএনএ টেস্টে অপেক্ষার প্রহর, লাশ চায় স্বজনরা টাম্পাকোর নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা

টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়ল্স লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত শ্রমিকের মধ্যে ৮ জনের লাশ এখনো শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন।

গাজীপুর: টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়ল্স লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত শ্রমিকের মধ্যে ৮ জনের লাশ এখনো শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। প্রিয়জনের লাশের খোঁজে প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন হতভাগ্য শ্রমিকদের স্বজনরা।


 
১০ সেপ্টেম্বর সকালে টঙ্গীর বিসিক শিল্প নগরীতে সংঘটিত ওই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩৯ জনের মধ্যে ৮ জনের লাশ রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। তাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত সম্ভব না হওয়ায় স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে পারছে না প্রশাসন।

অবশ্য ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত টাম্পাকোর ঘটনায় নিখোঁজদের তালিকায় রয়েছে ৯ জনের নাম। তাদের মধ্যে এখনও সন্ধান মেলেনি ১ জনের।

নিখোঁজ শ্রমিকরা হলেন- মাগুরার মনপুর এলাকার আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে আজিম উদ্দিন (৩৬), টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার উকুলকী এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩৭), গাজীপুরের টঙ্গী থানার গোপালপুর এলাকার সুলতান গাজীর ছেলে  আনিছুর রহমান (৩০), কুমিল্লার মুরাদনগর থানার টনকী এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মাসুম আহমেদ (৩০), লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থানার শিবপুর এলাকার মো. আবু তাহেরের ছেলে রিয়াদ হোসেন মুরাদ, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার মেছেরা এলাকার মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, সিলেটের গোপালগঞ্জ থানার দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার হাজী আব্দুল করিমের ছেলে রেদওয়ান আহম্মেদ, সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার আলীনগর এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে জয়নুল ইসলাম ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানার সারগীত এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মামুন (২৮)।

নিখোঁজদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীতে টাম্পাকো ফয়ল্স লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকান্ডের সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ ৯ জনের সন্ধান এখনো পায়নি স্বজনরা। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে ৮ জনের লাশ।

এ পরিস্থিতিতে দ্রুত তাদের লাশ শনাক্ত করে হস্তান্তরের দাবি জানান স্বজনরা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের আগে লাশ হস্তান্তর সম্ভব হবে না। কারণ ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় লাশ শনাক্ত করতে সময় লাগছে।

এই অবস্থায় প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে লাশ চাইছেন স্বজনরা। কিন্তু স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়েই ফিরিয়ে দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

নিখোঁজ আনিছুর রহমানের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিল্পী জানান, আমি শুধু স্বামীর লাশ চাই। ঘটনার সাড়ে ৩ মাস পেরিয়ে গেলে এখনো স্বামীর সন্ধান পাইনি। প্রশাসনের মহলে মহলে গিয়ে ঘুরছি কোন লাভ হচ্ছে না। আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

নিখোঁজ মাসুম আহমেদের স্ত্রী রূপালী বেগম জানান, সাড়ে ৩ মাস ধরে অপেক্ষা করছি স্বামীর সন্ধান পাচ্ছি না। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে তা জানি না। প্রশাসনের কাছে চাওয়ার কিছু নাই শুধু স্বামীর লাশ চাই।

টঙ্গী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন ভক্ত জানান, টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়ল্স লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত হন ৩৯জন। নিখোঁজ রয়েছে ৯ জন। ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে ৮ জনের লাশ। ডিএনএ পরীক্ষার রির্পোট এখনো পাওয়া যায়নি। আগামী জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে রির্পোট পাওয়া যাবে। তারপর লাশ শনাক্ত করে পরিবারের স্বজনদের কছে হস্তান্তর করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘন্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
আরএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।