ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিমের ব্যবসায় পড়ালেখা হলো না বাপ্পীর

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
ডিমের ব্যবসায় পড়ালেখা হলো না বাপ্পীর কাপ্তান বাজারে বাপ্পীর দোকান/ছবি-সুমন

রাত তখন পৌনে ২টা। রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিম বিক্রি করছেন এক যুবক। বিভিন্ন ধরনের সেদ্ধ ডিমের পাশাপাশি পাউরুটি-ভাজা ডিমও বিক্রি করছেন। রয়েছে দুধ বিক্রির ব্যবস্থাও। নাম জানা গেলো বাপ্পী ঘোষ।

ঢাকা: রাত তখন পৌনে ২টা। রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিম বিক্রি করছেন এক যুবক।

বিভিন্ন ধরনের সেদ্ধ ডিমের পাশাপাশি পাউরুটি-ভাজা ডিমও বিক্রি করছেন। রয়েছে দুধ বিক্রির ব্যবস্থাও। নাম জানা গেলো বাপ্পী ঘোষ।  

তিনি জানান, ৫ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাবা-মা ও দুই ভাই বোনের সংসারে তিনিই বড়। গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর আড়াইহাজারের পাচগাঁওয়ে। মূলত বাবাকে সাহায্য করতেই তার এ ব্যবসায় ‍আসা।

২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর ফলাফলের অপেক্ষা না করেই দোকানে বাবাকে সহযোগিতা করতে শুরু করেন বাপ্পী। আশা ছিলো ফলাফলের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন। ভর্তি হয়ে ক্লাশও শুরু করছিলেন। কিন্তু ৩-৪ মাস পর আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।  
 
বাপ্পী জানান, ছোটবেলায় দুষ্টু প্রকৃতির থাকায় পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ তেমন ছিল না। তবে এইচএসসি পাস করার পর মনোযোগটা বেড়ে যায়। উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন রাজধানীর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। কিন্তু বয়সের ভারে বাবা ব্যবসা থেকে অবসর নেওয়ায় হাল ধরতে হয় তাকে। তাই খাতা-কলম উঠিয়ে রাখতে হয়েছে তাকে।  

কাপ্তান বাজারে সপ্তাহে ২-৩ দিন বাপ্পীর দোকানেই রাতের খাবার সারেন গোড়ান থেকে আসা মুরগি ব্যবসায়ী ইউনুস মিয়া। তিনি বলেন, মুরগি কিনতে আসলে ক্ষুধা লাগলে এখানেই খাই।  
 
বাপ্পীর দোকানে ডিমভাজিসহ এক পিস পাউরুটির দাম ২৫ টাকা, সেদ্ধ হাঁস ও মুরগির ডিমের দাম প্রতি পিস ১৫ টাকা। এছাড়াও দুধের তৈরি এক গ্লাস মালাই ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়।
 
বাপ্পী বাংলানিউজকে বলেন, বাবাকে সহযোগিতা করতেই এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে দোকানে বসি। এখন বাবা আমার উপর ব্যবসা দিয়া অবসর নিয়েছে। একারণে আমার আর বিএসসি পড়াশোনাটা করা হয়ে উঠেনি।

প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত দোকান বসান। এতে দিনে গড়ে খরচ বাদে ৫-৮শ’ টাকা মুনাফা হয়।
 
কোন সময় বিক্রি ভালো জানতে চাইলে তিনি বলেন, শীতের সময় বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু লাভ কম। গরমে বিক্রি কম হলেও লাভ বেশি। কারণ শীতের সময়, দুধ ও ডিম বেশি দামে কিনতে হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।