পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পাহাড়-হ্রদ ঘেরা এ জেলা এখন পর্যটক মূখর।
শহরের হোটেল-মোটেলগুলোতে তিল পরিমাণ ঠাঁই নাই।
এছাড়া বছর শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় অনেক মা-বাবারা তাদের সন্তানদের নিয়ে ছুটে এসেছেন পাহাড়-হ্রদের পল্লীতে।
রাঙামাটির উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে-পুলিশের পলওয়েল পার্ক, সুখী নীলগঞ্জ, ডিসি বাংলো পার্ক, রাজবন বিহার, টুকটুকি ভিলেজ, সুবলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং ও কাপ্তাই হৃদ।
এদিকে, এশিয়ার বৃহত্তর কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য অবলোকন করা অন্যদিকে পাহাড়ে কান পেতে ভালবাসার কথা শোনা এমনটা মতামত ব্যক্ত করছেন জেলার বাইরে থেকে আসা হাজারো পর্যটক।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে আসা ছাত্র আনছারুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ছুটি পেয়ে পাহাড়ি এ জেলায় বন্ধুরা মিলে বেড়াতে এসেছি। অনেক ভালো লাগে এ জেলা। তাছাড়া এ জেলার পাহাড়-হ্রদ মিলে মিশে একাকার যা দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রোববার (০১ জানুয়ারি) সারাদিন এ শহরে ঘুরে বেড়াবো।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা আসাদ-শম্পা দম্পতি বাংলানিউজকে বলেন, সারা বছর ঘর-অফিস আর বাচ্চাদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। বছরের এ সময়টা এলে বাচ্চাদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াই।
এক প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, রাঙামাটিতে এবারই প্রথম আসা। তবে দেশের অন্য জায়গার তুলনায় এ শহরে অটোরিকশার (সিএনজি চালিত অটোরিকশা) ভাড়াটা একটু বেশি।
অটোরিকশা চালক জব্বার বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ি পথ আমরা তেল দিয়ে গাড়ি চালাই। স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে যে ভাড়া নিই, পর্যটকদের কাছ থেকেও একই ভাড়া নিই।
এদিকে, পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি কোতোয়ালি থানা পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, নতুন বছর শুরু। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আমরাও দায়িত্ব পালন করছি।
রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক নেছার আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে এ জেলায় প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেলের রুমগুলো রোববার পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাঙামাটির হোটেলগুলোতে চার হাজার পর্যটক ধারণ ক্ষমতা থাকলেও প্রতিদিন এ জেলায় ১৫ হাজার পর্যটকের পদচারণা ঘটছে। পর্যটকরা এ কারণে আবাসন সংকটে ভুগছে।
রাঙামাটি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দীন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি-ঢাকা রুটের টিকিট আগে বুকিং হয়ে যাওয়ায় আমাদের বাড়তি সার্ভিসের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিন ধরে এ জেলায় পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে হোটেলের রুমগুলো রোববার পর্যন্ত বুকিং রয়েছে।
তিনি আরও জানান, কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালে হ্রদের পানি বাড়তি থাকায় সেতুটি ডুবে ছিল। এ কারণে পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটক সংকটে ভুগছিল। এতে সরকার বিশাল রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এবার প্রতিদিন যেভাবে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে এ মৌসুমে সব সংকট দূর হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৭
আরবি/আরএ