ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে দুদকের চিঠি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসিতে দুদকের চিঠি ময়মনসিংহ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদে

ঢাকা: জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ময়মনসিংহ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক প্রনব কুমার ভট্টাচার্য।  

তিনি জানান, নির্বাচনী হলফনামায় প্রায় সাড়ে ৫৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন সালাহউদ্দিন।

দুদক সচিব ড. শামসুল আরেফিন সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি গত ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন বরাবর পাঠানো হয়েছে।

দুদকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে দাখিলকরা হলফনামায় সালাহউদ্দিন স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ১ লাখ টাকা এবং অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে সাড়ে তিন লাখ টাকার হিসাব দেন। মোট সাড়ে ৪ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি উল্লেখ করেন। কিন্তু একই বছর ৩০ জুনে এনবিআরের ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার কর অঞ্চল ৬ তে ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৮৭৬ টাকার সম্পদের হিসাব দেন।

এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ৩ লাখ ৩ হাজার টাকার হেবা সম্পত্তি অর্জন করেছেন যা তিনি কোথাও উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৭৬ টাকা।

আরও জানা গেছে, ‍সালাহউদ্দিন আহমেদ ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। যা তিনি নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেননি। ফলে হলফনামায় তিনি অসত্য তথ্য দিয়ে নৈতিকতা পরিপন্থী কাজ করেছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এদিকে এর আগে গত ২৯ অক্টোবর দুদক থেকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ জারি করেছিল। এছাড়া সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের মার্চ মাসে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এর পরপরই দুদকের উপ-পরিচালক শেখ আবদুস সালামকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় কমিশন, আর পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

অন্যদিকে নিজ উপজেলাকে বাল্য বিয়ে মুক্ত ঘোষণার ১৫দিনের মধ্যেই নিজের দুই মেয়ের বাল্যবিয়ে দেন সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন। এমনকি দুই মেয়ের বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ ১৫ হাজার অতিথি।

বিয়ের কিছুদিন আগে এমপির বড় মেয়ে মাসকুরা মীম পায়েল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করলেও ছোট মেয়ে আফসানা মীম প্রিয়ন্তী তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। বড় মেয়ের বিয়ে হয় দুদক কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান নন্দন ও ছোট মেয়ের বিয়ে হয় পুলিশের এসআই ওবায়দুর রহমান কায়সারের সঙ্গে।

কিন্তু চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ মাঠে জমকালো আয়োজনে এমপি নিজেই তার উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করেন। আর তার ১৫ দিনের মাথায় একই স্থানে নিজের ছোট মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেন এমপি।

বিয়ের আয়োজনে ১৫ হাজার অতিথির জন্য জবাই করা হয় ৫০০ খাসি। খাবারের মেন্যুতে ছিল বাসমতি চালের পোলাওসহ মুখরোচক নানা খাদ্য। অনুষ্ঠানের খরচ হয় প্রায় ৪ কোটি টাকা। স্থানীয় এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠসহ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ বিয়ের আয়োজন তদারকি করেন স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।