ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে, বিচার হবে ৭ ডিবি সদস্য’র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে, বিচার হবে ৭ ডিবি সদস্য’র ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে আটক ডিবি সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: কক্সবাজারে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাত সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।  তাদের আসামি করে ডিসেম্বরের মধ্যেই অভিযোগপত্র দাখিলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে সংস্থাটি। দেশজুড়ে আলোচিত চাঞ্চল্যকর এই অপরাধে জড়িত সাত পুলিশ একসঙ্গে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত শেষ করে এনেছি।   এই মাসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার খুব চেষ্টা করব।

  যদি নাও পারি অবশ্যই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেব।

অভিযোগের সপক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তাধীন বিষয় প্রকাশ করা উচিৎ হবে না।   তবে এতটুকু বলতে পারি, ফাইনাল রিপোর্ট নয়, চার্জশিট হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি।  

গত ২৫ অক্টোবর ভোরে টেকনাফ উপজেলার মেরিন ড্রাইভ সড়কের শাপলাপুর এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালায় সেনাবাহিনী।   গাড়িতে ডিবির সাত সদস্য ছিলেন।   সেনা সদস্যরা ডিবির ছয় সদস্যকে আটক করেন।   এসময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়া একজনকে পরে আটক করে পুলিশ।

ব্যবসায়ী গফুরকে কক্সবাজার শহর থেকে আটকের পর টেকনাফে নিয়ে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।   সেই টাকা নিয়ে ফেরার পথে সেনাচৌকিতে তল্লাশির মুখে পড়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা।

ছাড়া পেয়ে গফুর সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।   পুলিশ সদস্যরা হলেন, এসআই মনিরুজ্জামান, গোলাম মোস্তফা ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ আহমেদ, আলাউদ্দিন ও নূরুজ্জামান এবং কনস্টেবল মোস্তফা।

সূত্রমতে, আটকের পরই তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন জমা দেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল।   এরপর সাতজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।  

গ্রেফতার হওয়া ডিবির সাত সদস্য এখনো কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সূত্রমতে, ৩০ অক্টোবর মামলাটির তদন্তভার নেয় পিবিআই। তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি সদস্যদের আটকের সময় উপস্থিত সেনাসদস্যদের বক্তব্য নেন।   আটকের সময়ের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেন।   আসামিদেরও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।  

এরপর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে।   অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর কেস ডকেট এবং সাক্ষী ও আসামিদের বক্তব্যসহ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করেন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।   পিবিআইয়ের কক্সবাজারের এসএসপি, তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে বসে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অভিযোগপত্র তৈরির নির্দেশনা দেন।

জানতে চাইলে বনজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, শুধু একটা অভিযোগপত্র দিলেই তো হবে না, মামলাটা তো আদালতে প্রমাণ করতে হবে।   আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।   অগ্রগতি প্রতিবেদনে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল।   সেগুলো ধরিয়ে দিয়েছি।   সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিশ্চিত করে অভিযোগপত্র দিতে বলেছি।   প্রয়োজনে আদালতের নির্দেশনা চাওয়ার কথা বলেছি।

‘যেহেতু চাঞ্চল্যকর মামলা, তদন্তের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও সতর্কতা অবলম্বন করছি।   যে চার্জশিট দেওয়া হবে সেটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন যাতে না ওঠে, সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। ’ বলেন পিবিআই প্রধান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
আরডিজি/টিসি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।