ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা ওরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা ওরা শিশু পতাকা বিক্রেতা রিয়াদের কাছে পতাকা কিনছেন রিকশাচালক রমজান আলী; ছবি- কাওছার উল্লাহ আরিফ

বগুড়া: রিয়াদ ওরফে হাসান। এখনও শিশুকাল পেরোয়নি। লাল-সবুজের পতাকার পট্টি মাথায় বাঁধা। হাতে একটা লাঠি। লাঠির সঙ্গে বিশেষভাবে রাখা পতাকা। একটি মাঝারি আকারের পলিথিন ব্যাগও রয়েছে তার হাতে।

লাল-সবুজের পতাকাগুলো বিক্রি করতে করতে শহরের অলিগলি ছুটে চলছে এই শিশু। তারই ক্রেতা হলেন রমজান আলী নামের একজন রিকশা চালক।

শিশুটির কাছে গিয়ে দাঁড় করালেন রিকশাটি। ‘এই ছোট পতাকা দেখাও তো। ’ আওয়াজ শুনে এক গাল হেসে দিলো শিশুটি।

এরপর সেই রিকশা চালকের হাতে একটি পতাকা ধরিয়ে দিলো শিশুটি। পছন্দের পতাকা হাতে পেয়ে একটু নেড়েচেড়ে দেখলেন তিনি। তারপর দরদাম করে শিশুর কাছ থেকে একটি পতাকা কিনলেন। রিকশার হাতলে সেই পতাকাটি উড়িয়ে সেখান থেকে যাত্রীর খোঁজে সামনের পানে ছুটলেন চালক রমজান আলী।

ডিসেম্বর মানেই মহান বিজয়ের মাস। মাসটি প্রত্যেক বাঙালির জীবনে নানা কারণে স্মৃতিগাঁথা।

মহান বিজয় দিবস পালনে সরকারি, আধা সরকারি, রাজনৈতিক, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ইতোমধ্যেই নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

গ্রামাঞ্চলের মানুষও থেমে নেই। শহুরে মানুষের পাশাপাশি দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি প্রায় গুটিয়ে এনেছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষগুলো। আর এসব মানুষদের সঙ্গে অনেকটা পাল্লা দিয়ে ছুটছেন লাল-সবুজের পতাকা বিক্রেতারা। বগুড়া শহরের সাতমাথা মোড়ে এভাবেই ফেরিওয়ালারা বসিয়েছে পতাকা বিক্রির পসরা;ছবি- কাওছার উল্লাহ আরিফ বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথাসহ আশেপাশে বিভিন্ন এলাকা ও বিতণীবিতান ঘুরে জাতীয় পতাকা বিকিকিনির এমনই দৃশ্য বাংলানিউজের ক্যামেরায় উঠে আসে।

হাটবাজার ও পাড়া মহল্লা ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন লাল-সবুজের সেই ফেরিওয়ালারা। শহরের দোকানগুলোয় স্থায়ী ও মৌসুমী দর্জিরা জাতীয় পতাকা তৈরিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

জাতীয় পতাকা নিয়ে শহরের সাতমাথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মো. সাগর। তিনি ঢাকা থেকে পতাকা বিক্রি করতে এই শহরে এসেছেন। পাইপের খুঁটির ফাঁকে ফাঁকে লাগিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে রেখেছেন অসংখ্য পতাকা। ক্রেতা আসছেন পছন্দ করছেন আর পতাকা কিনছেন।

মো. সাগর বাংলানিউজকে জানান, ডিসেম্বর মাস শুরুর দিকে তিনি পতাকা বিক্রির উদ্দেশ্যে বগুড়া শহরে আসেন। এখানে একটি সস্তার আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। সারাদিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পতাকা বিক্রি করেন। বিকেল থেকে সাতমাথায় এসে ভ্রাম্যমাণ দোকান গড়েন। দর্জির দোকানে পতাকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর; ছবি- কাওছার উল্লাহ আরিফপতাকা বিক্রেতা সোনাতলার মাহবুব ও খোরশেদ বাংলানিউজকে জানান, তুলনামূলক স্বল্প আয়ের মানুষগুলো তাদের কাছ থেকে পতাকা কিনে থাকেন। প্রত্যেক বছর বিজয়ের মাসে এই ব্যবসা করেন তারা। ৩০ থেকে ১৫০ টাকা দামের জাতীয় পতাকা পাওয়া যায় তাদের কাছে। বিজয় দিবসের আগের ও বিজয় দিবসের দিন তাদের মূল বেচাবিক্রিটা হয় বলেও যোগ করেন এসব পতাকা বিক্রেতা।   

দর্জি আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, হাতে খুব কম সময় রয়েছে। তাই নতুন করে কোন অর্ডার নেওয়ার সুযোগ নেই। আগের নেওয়া অর্ডারের জাতীয় পতাকাগুলো তৈরিতে দিনরাত এক করে কাজ করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।