ঢাকা, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ মে ২০২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

ছিন্নমূলদের ভরসা রেলওয়ে স্টেশন ও ফুটপাত 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:১৬, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
ছিন্নমূলদের ভরসা রেলওয়ে স্টেশন ও ফুটপাত  ফুটপাতে শুয়ে রাত কাটছে ছিন্নমূলদের- ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ঘড়ির কাটায় রাত ২টা বেজে ৩৫ মিনিট। শীতও জেঁকে বসেছে। সারাদিনের কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন নিরব, অনেক এলাকাতেই নেই তেমন কোনো সাড়া শব্দ। দিনের বেলায় নগরীতে যানজট থাকলেও শীতের রাতে সড়কগুলো ফাঁকা। কিছু সময় পরপর মালবাহী ট্রাক চলাচল করতে দেখা গেছে।   

এদিকে, শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করছেন হাজারো মানুষ। আকাশকে ছাদ বানিয়ে সড়কের আইল্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশনে কাঁথা বা চাদর মুড়ি দিয়ে নিশ্চিন্তেই ঘুমাচ্ছেন ছিন্নমূল মানুষেরা।

 

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বাজধানীর কমলাপুর, গুলিস্তান, কারওয়ানবাজার, শাহবাগসহ বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। অথচ দিনের বেলায় এসব স্থানে চলতে গেলে মানুষের গায়ে গায়ে স্পর্শ লাগে, কিন্তু রাতের বেলায় এই স্থানগুলোই যেন ছিন্নমূল মানুষদের রাতযাপনের স্থান।  

রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রাতে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের গেট থেকে টিকিট কাউন্টারের সামনে পর্যন্ত মাটিতে শুয়ে আছে শত শত মানুষ। এদিকে অনেকে বসেও আছে। রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রায় পুরো মেঝেতেই শুয়ে-বসে রাতযাপন করছে তারা।  
কমলাপুর স্টেশনে এভাবেই রাত কাটাচ্ছেন ছিন্নমূলরা- ছবি: ডিএইচ বাদলএদিকে টিকিট কাউন্টারের বাইরে হাঁটা পথেও মাটিতে সারিবদ্ধ হয়ে বস্তা/প্লাস্টিক অথবা কাঁথা বিছিয়ে গাঁয়ে একটি চাদর বা কাঁথা মুড়ে ঘুমাচ্ছেন। এখানে নারী-শিশু, বৃদ্ধদেরও দেখা গেছে। কেউ কেউ খবরের কাগজ বিছিয়ে শোয়ার জায়গা করে নিচ্ছেন।  

‘আমগো ঘর-বাড়ি নাই, যেহানে রাইত সেহানেই কাইত।  কথাগুলো বলছিলেন ছিন্নমূল শামীম।  

পরিবারে আপনজন বলতে তার মা আর ছোট একটা ভাই আছেন। রিকশা চালক বাবা অনেক আগেই তাদের ফেলে চলে গেছেন। শামীমের মা জাহানারা বোতল কুড়ায় আর শামীম ভাঙ্গারি সামগ্রী কুড়িয়ে বিক্রি করেন।  
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন ছিন্নমূলরা- ছবি: ডিএইচ বাদল ‘পুলিশ মাঝে মাঝে আইয়া (এসে) আমাগো তুলে দিলেও পরে আবার চুপ করে করে ঘুমাই। ’ 

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের আইল্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশনের ভাসমান এসব ছিন্নমূল মানুষের বসবাস ও রাতযান করতে দেখা যায়। শীত এলেই এসব মানুষদের কষ্ট যেনো একটু বেড়ে যায়। তাদের পরনে কাপড় ছাড়া আর কিছুই থাকেনা। শুধু একটা শীতের কম্বল পাওয়ার আশায় দিনগুনে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
এসজেএ/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।