ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাদক চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
মাদক চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা মতবিনিময় সভা-ছবি-সুমন শেখ

ঢাকা: দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদক ও চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ভারতের সঙ্গে আলোচনার ফলস্বরূপ সীমান্ত হত্যা কমে এসেছে এবং এই সংখ্যা আরও কমবে বলে জানান তিনি।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দফতরে সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের ‘সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার ৩৩ জন সংসদ সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না। সব মাদকই সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। দেশে কোনো মাদক যেন প্রবেশ না করে সেজন্য সীমান্ত এলাকা আরও সুরক্ষিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সীমান্তবর্তী সংসদ সদস্যদের কাছে বিভিন্ন সাজেশন চাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, টেকনাফের বিভিন্ন পথ দিয়ে মাদক প্রবেশ করছে। এ ব্যাপারে আরও সজাগ থাকতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় যেসব পথ দিয়ে বৈধভাবে আমদানি-রফতানি হয় সেসব পথগুলো যেন সুরক্ষিত থাকে সেই আলোচনা হয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষ হয়েছে। কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করতে দুটি জাহাজ সংযুক্ত করার পাশাপাশি আরও দুটি জাহাজ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করতে ১৫ হাজার নতুন সদস্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সীমান্ত রাস্তাগুলোর কাজ পর্যায়ক্রমে করা হচ্ছে। সংসদ সদস্যদের সাজেশন অনুযায়ী বিজিবির আরও চেকপোস্ট বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

এছাড়া, সীমান্ত পথ দিয়ে যেকোন অপরাধী আসা-যাওয়া, অস্ত্র চোরাচালানসহ মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো উপকরণ আমদানি বন্ধে পুলিশের চেকপোস্ট বাড়ানোর সাজেশন পেয়েছি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতার বিষয়ে সংসদ সদস্যদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কথাটি ঠিক নয়। বিজিবি-কোস্টগার্ড-পুলিশ-র‌্যাবের মধ্যে আরও সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। সমন্বয় আমাদের আছে, যেখানে নেই সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মাদক আইনে কিছু ফাঁকফোকর আছে যা সংশোধন করে সংসদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোনো মাদক ব্যবসায়ী বা চোরাচালানকারীরা আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে না।

মাদক চোরাচালানে সংসদ সদস্যরা জড়িত এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। জড়িত ব্যক্তি প্রশাসনেরই হোক কিংবা জনপ্রতিনিধিই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের আওতায় আনা হবে।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর ফল আমরা পাচ্ছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে সীমান্ত হত্যা কমে এসেছে। ২০০৮ সালে ৬৮ জন, ২০০৯ সালে ৬৭ জন, ২০১০ সালে ৬০ জন, ২০১১ সালে ৩৯ জন করে ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা কমে চলতি বছরে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। সীমান্ত হত্যা যেন বন্ধ হয় আমরা সেই জায়গাতে গিয়েছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।