সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) ভারতবর্ষ বিভক্তির দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রবর্তক জিন্নাহর জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের চ্যান্সেরি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। এতে অংশ নেন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত কর্মকর্তা, পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে বক্তব্য প্রদানকালে পাকিস্তানি হাইকমিশনার বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীর দাসত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কায়েদ-ই-আজমের বিজ্ঞ ও নিঃস্বার্থ রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি উপমহাদেশের কোটি মুসলিম ঋণী। ’
যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় পাকিস্তান সবচেয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেও রফিউজ্জামান সিদ্দিকী প্রতিবেশী ও সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে আক্রমণ করে বলেন, ‘ভারতীয় মুসলিমদের বর্তমান দুঃখজনক অবস্থা এটাই প্রমাণ করে যে, ভারতবর্ষের মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। ’
অনুষ্ঠানে জিন্নাহর জন্মদিন উপলক্ষে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীও পাঠ করে শোনানো হয়।
পাকিস্তানি হাইকমিশনারের বক্তব্যের পরই অনুষ্ঠানস্থলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান অতিথিদের অনেকেই। কেউ কেউ ক্ষোভও প্রকাশ করেন। অনেকেই বলেন, যে জিন্নাহ বাঙালির মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন, তার জন্মদিনে সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন হামলায় জর্জরিত পাকিস্তানের হাইকমিশনারের এমন সাম্প্রদায়িক বক্তব্য কেবল বেমানানই নয়, ঔদ্ধত্য ও ধৃষ্টতাপূর্ণ এবং একইসঙ্গে প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিনষ্টের উসকানিমূলকও।
এ বিষয়ে পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি হাইকমিশনারের বক্তব্যকে উসকানিমূলক বলে অভিহিত করেন।
কাদের বলেন, পাকিস্তান হাইকমিশনার সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কথা বলেছেন, যিনি কোটি বাংলাদেশির ভাষার অধিকার লুণ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। যিনি পাকিস্তান নামক একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র সৃষ্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন। টাইম ম্যাগাজিনও বলেছে, পাকিস্তান এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্র।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এইচএ/