দীর্ঘদিন ধরে এদের খোঁজে পুলিশ চষে বেড়িয়েছে শহরের এপ্রান্ত-ওপ্রান্ত। কিন্তু এরা সবসময় থেকে গেছে নাগালের বাইরে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসি রণজিৎ বড়ুয়া বলেন, এ থানায় যোগদানের পর থেকেই লোকমুখে এদের নাম শুনে এসেছি। ছিনতাইকারীর তালিকায়ও এদের নাম রয়েছে। সেই থেকে এদের পাকড়াও করতে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছিল। অবশেষে ভোররাতে পুলিশ সফল হয়। এদের কাছ থেকে পুলিশ ৮টি ছোরা, ৮টি মুখোশ এবং ৫টি লোহার রড উদ্ধার করেছে।
তিনি আরো বলেন, এদের নেটওয়ার্ক অনেক শক্তিশালী। আটকের পর থেকেই এদেরকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য জোর তদবির চলছে। কিন্তু আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি, এদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
কক্সবাজার সদর থানাসূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোর রাত ৩ টা ৫০ মিনিটে শহরের সমুদ্র সৈকতের কবিতাচত্বর পয়েন্টের ইলিয়াছ সওদাগরের দোকান সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বের ঝাউবাগান থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে পর্যটন জোনের অপ্রতিরোধ্য ছিনতাইকারী গ্রুপের ১১ জনকে আটক করা হয়।
এরা হলো সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউপি’র পশ্চিম লারপাড়ার মীর কাশেমের ছেলে মো.রুবেল (২০) ও নুরুল আজিম প্রকাশ হাসান আলীর ছেলে মোবারক আলী (২০), পোকখালী ইউপি’র পশ্চিম গোমাতলী গ্রামের মৃত শহর মুল্লুকের ছেলে মো. কছিম (৩৫), কক্সবাজার পৌরসভার বাদশাঘোনার আইয়ুব আলীর ছেলে মো. শাহীন (২০), বইল্ল্যাপাড়ার মৃত আবু বক্করের ছেলে আবু তাহের (২৮), এন্ডারসন রোড নুর পাড়ার মৃত আমীর হোসেনের ছেলে রাফসান হোসেন মিন্টু (৩১),মোহাজের পাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে তুষার আহাম্মদ মাওন (২৩) ও আবদুল কাদেরের ছেলে ফজলে করিম (২৭), দক্ষিণ বাহারছড়ার মৃত ফরিদের ছেলে নুরুল আবছার (২০), দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার নুরুল আলমের ছেলে রায়হান (২০) এবং মৃত আলী আকবরের ছেলে আলাউদ্দিন (২০) ।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ( তদন্ত ) কামরুল আজম বলেন, ধরা পড়া এই ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি-আইনে দুটি নতুন মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এরপর এদের আদালতে পাঠানো হবে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (অপারেশন ) মাঈন উদ্দিন বলেন, ধৃতরা অত্যন্ত চালাক ও সুচতুর। তারা শহরে একাধিক নামে পরিচিত। পুলিশের তালিকায়ও তাদের একাধিক নাম রয়েছে। এদের সবার বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাই মামলা সহ কমপক্ষে ২০/২৫ টি করে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজের গুণধর ব্যক্তিরাসহ সবাই যদি পুলিশকে সহযোগিতা করেন তবেই এই শহরকে ছিনতাইমুক্ত করা সহজ হবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, থার্টিফাস্ট নাইট ও পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে সমুদ্র নগরীতে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। সাদা পোশাকে কাজ করছে ৫০ জন পুলিশ সদস্য। এছাড়া সোমবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। বিশ্ব দরবারে কক্সবাজারের সুনাম বাড়াতে হলে ছিনতাই বন্ধ হওয়া জরুরি। সবাই যদি সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসেন তবেই ছিনতাই নেমে আসবে শুন্যের কোঠায়।
বাংলাদেশ সময়:১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
টিটি/জেএম