বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে হাড় কাঁপানো শীতে ছিন্নমূল মানুষগুলো জবুথবু হয়ে পড়েছে।
ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে গোটা রাজশাহী। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। এর উপর উত্তরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
সকাল থেকে তীব্র শীতের মধ্যে কোমলমতি শিশু ও তার অভিভাবকদের স্কুলে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হঠাৎ করে শীতের দাপট বাড়ায় কাবু হয়ে পড়েছে রাজশাহীর সাধারণ মানুষ। কৃষিতেও দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বিশেষ করে কৃষকের মাঠে থাকা আলুর ফসলে লেট ব্লাইট (পচন রোগ) ছড়িয়ে পড়েছে। আর বোরো ক্ষেতের বীজতলায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ইনজুরি। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলেন, 'তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট দেখা দেয়। এজন্য এ সময় কৃষকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। থানা বা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আলুক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক দিন থেকেই তাপমাত্র কমছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই অবস্থার উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে রাতে কুয়াশার ঘনত্ব যদি বাড়তে শুরু করে। তাহলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
কিন্তু দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই অবস্থান করবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এই সপ্তাহ জুড়ে দুই থেকে তিনটি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহী ও আশপাশের জেলার ওপর দিয়ে। এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে বলে জানান, রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
তিনি জানান, বুধবার (০৩ জানুয়ারি) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৮২ শতাংশ।
ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। বেশি দুর্ভোগ ছিন্নমুল মানুষের।
রাজশাহীর চরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এসব এলাকার মানুষগুলোকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে কয়েক দিন থেকেই। এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও বেসকারি সংস্থা শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। সরকারিভাবে এখনও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
তবে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ বাংলানিউজকে জানান, যা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল এরই মধ্যে তা সিটি করপোরেশন এলাকা ও জেলার নয় উপজেলার ইউএনওদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বলের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। হাতে পেলেই আবার তা বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
এসএস/এএটি
কুয়াশা-কনকনে শীতে কাহিল উত্তরের মানুষ