মেলায় আসা দর্শক-দর্শনার্থীদের সিংহভাগই নারী। এজন্য স্থানীয়দের কাছে মেলাটি ‘বউমেলা’ হিসেবে পরিচিত।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ইছামতি নদীর তীরে প্রথমনাথ কমল কামিনী দত্ত স্মৃতি পূজা অঙ্গনে প্রায় একশ’ বছর ধরে দুর্গোপূজা হয়ে আসছে। সেই সময় থেকে আজ অবধি ইছামতিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ইতি টানা হয়। সেখানে প্রচুর ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সমাগম হতো ও এখনো হয়। আর সেই থেকে প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বউমেলা হয়ে আসছে। এই মেলার মূল অংশে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ।
রীতি অনুযায়ী মেলাটি শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে শুরু হয়ে পরদিন শনিবার (২০ অক্টোবর) সকাল নাগাদ চলে। পরে ধীরে ধীরে তা ভেঙে যায়। দুপুর হওয়ার আগেই দোকানিরা সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে যার যার অবস্থানে চলে যান।
রকমারি পণ্যের পসরা থাকে এ মেলায়। মিষ্টান্ন, শিশুতোষ খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, আলতা থেকে ঘর গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস পাওয়া যায় এই বউ মেলায়। প্রায় ২০টির মতো জিলাপির দোকান বসেছিলো এই মেলায়। বিক্রিও হয়েছে ভালো।
ওমর ফারুক, গোলজার, সুমন চন্দ্রসহ বেশ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, অনেক পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই মেলার। মেলার আসার পর বাড়ি ফেরার সময় জিলাপি না নিতে পারলে যেন কেনাকাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কারণ এই মেলার জিলাপির স্বাদ কিছুটা ভিন্ন। মেলা উপলক্ষে স্থানীয় জামাই ও স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে থাকেন। গ্রামের বাড়ি বাড়িতে খই-মুড়কি, নারিকেল ও চিড়া-মুড়ির নাড়ু তৈরি করা হয়। দিপালী রানী, রুপালি ব্যানার্জী বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় সবাই খুব আনন্দ করেছি। খেলনা ও বিভিন্ন খাবার কিনেছি। এক কথায় মেলায় এসে খুব ভাল লেগেছে।
মেলার আয়োজক কমিটির কোষাধ্যক্ষ আনন্দ সরকার বাংলানিউজকে জানান, প্রায় একশ’ বছর ধরে এখানে মেলা হয়ে আসছে। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ মেলায় আসে। প্রতিবারের মতো এবারো মেলাটি বেশ ভালভাবেই সমাপ্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
এমবিএইচ/এএটি