ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ধুলায় ধূসর মিরপুর, বাড়ছে সংক্রামক ব্যাধি

ইয়াসির আরাফাত রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৮
ধুলায় ধূসর মিরপুর, বাড়ছে সংক্রামক ব্যাধি ধুলার আস্তরণে মনে হচ্ছে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে রাজধানী। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: রাজধানীতে বর্ষাজুড়েই ছিল কাদাপানি আর খানাখন্দের দুর্ভোগ। অন্যসব এলাকার মতো মিরপুরবাসীও এতে ছিলেন অতিষ্ট। বর্ষা মৌসুম শেষে এখন শীত না আসতেই ধুলায় ধূসর হয়ে পড়েছে রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে একটি মিরপুর। ঘর থেকে বের হলেই পড়তে হচ্ছে ধুলার কবলে। শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থী সবাই প্রতিনিয়ত এ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

ধুলাদূষণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে অনেকেই নাকে হাত বা রুমাল দিয়ে চেপে ধরছেন। ধুলার তীব্রতায় অনেক জায়গায় মাস্কও কাজে আসছে না।

আর ধুলায় ঢাকা পড়ছে খাবার হোটেল, ফুটপাতের দোকান। বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি।

শনিবার (২০ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর-১২ নম্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এতে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। খোঁড়াখুঁড়ির প্রভাব পড়েছে রাস্তায়। শীতের আগমনি বার্তার সঙ্গে এ রাস্তায় বেড়েছে ধুলার উপদ্রব। প্রচণ্ড ধুলায় মানুষজনের নাস্তানাবুদ অবস্থা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী ও স্কুলগামী শির্ক্ষাথীরা। ধুলার কারণে রাস্তার পাশের হোটেলের বিক্রি কমে গেছে। ট্রাফিক পুলিশ, মেট্রোরেলের কর্মচারী, রিকশা চালক, পথচারী কমবেশি সবাই মাস্ক পরে নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত।

শাহিন আহমেদ নামে একটি বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় এখন বের হতে ইচ্ছা করে না। ধুলায় ধূসর সর্বত্র। মাস্কও ধুলার মোকাবেলা করতে পারছে না। মুখে কাপড় গুজে গাড়িতে উঠছেন এক নারী।  ছবি: জি এম মুজিবুরএ সময় তিনি হাত দিয়ে ইশারায় একটি কালো রঙের গাড়ি দেখান। যেটি ধুলায় ধূসর রং ধারণ করেছে। তিনি বলেন, ধুলার কারণে চায়ের দোকান আর খাবারের হোটেলে মানুষ খেতে পারেন না। সেখানে বিক্রিও কমেছে।

ধুলায় মিরপুর ১০, ১২, পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও এলাকার পরিস্থিতি একেবারে শোচনীয়।

যেভাবে ধুলার সৃষ্টি: ‘উন্নয়ন’ কাজের খোঁড়াখুঁড়ি, ভবন নির্মাণের মাটি, বালু, সিমেন্ট, পাথর, নুড়িপাথর, কংক্রিট যত্রতত্র রেখে দেওয়া। আবার রাস্তা দখল করে ভবনের বর্জ্য মাসের পর মাস ফেলে রাখায় সেখান থেকে পদপিষ্ট হয়ে ধুলোর সৃষ্টি হয়। কিছু স্থানে রাস্তার পাশের ড্রেনেজের ময়লা জমিয়ে রাখায় শুকিয়ে যাচ্ছে। এগুলো থেকেও ধুলা উড়ছে। এসব ময়লা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ায় তা ধুলায় পরিণত হয়ে দূষণের সৃষ্টি করছে।
 
বিশেষজ্ঞের মত: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নানা সংক্রামক ব্যাধি। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চোখের সমস্যাসহ ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বেশি। এসবের অন্যতম কারণ ধুলার দূষণ।

বঙ্গবন্ধু শে খমুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ধুলা দূষণের কারণে নানা সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
ইএআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।