মঙ্গলবার (০৬ নভেম্বর) সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ ও রমনা এলাকাসহ পুরো রাজধানীতে পুলিশের বাড়তি তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। উদ্যান এলাকায় থানা পুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিন শাহবাগ, মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, দোয়েল চত্বর, টিএসসি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশ পথে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
জনসভার কারণে রাজধানীর শাহবাগ মোড়, মৎস্যভবন, দোয়েল চত্বর এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
ডিএমপি’র রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বাংলানিউজকে বলেন, জনসভায় জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে পুরো ঢাকা শহরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ডিএমপি। যেকোন ধরনের অপতৎপরতা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। কেউ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, জনসভা ঘিরে রাজধানীর প্রতিটি প্রবেশপথ বিশেষ করে গাবতলী, সায়েদাবাদ, উত্তরা এলাকায় পুলিশ তল্লাশি চৌকি স্থাপন করেছে। রাজধানীমুখী সব যানবাহনের যাত্রীদের তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
সাভার থেকে মতিঝিলগামী ওয়েলকাম পরিবহনের যাত্রী রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৮টায় হেমায়েতপুর থেকে রওনা করেছি, শাহবাগ আসতেই বেলা ১টা বাজলো। গাবতলী পার হতেই চার ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। গাবতলীতে প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে প্রত্যেক যাত্রী ও ব্যাগ তল্লাশি করছে পুলিশ। এর ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রুহুল আমিন সাগর বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ যানবাহনগুলো থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় তল্লাশির বিষয়ে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফরিদ উদ্দিন বলেন, এ সমাবেশকে ঘিরে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতার চেষ্টা না হয়, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশনা রয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। নিরাপত্তাজনিত কারণেই ঢাকায় প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি করা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার রাতে ডিএমপি’র মিডিয়ার অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, ডিএমপি থেকে নিরাপত্তা, মাইকের নির্দিষ্ট ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জনসভা শেষ করাসহ বেশ ক’টি শর্তে ঐক্যফ্রন্টকে জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের জনসভা সফল করতে মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া মঞ্চ নির্মাণ, মাইক স্থাপনসহ সার্বিক প্রস্তুতি দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পন্ন হয়।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সংলগ্ন উদ্যানে দক্ষিণ দিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বসার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নতুন জোট হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর ঢাকায় এটি তাদের প্রথম জনসভা।
সরেজমিন দেখা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে জনসভা আহ্বান করা হলেও মঞ্চের চারপাশজুড়ে শুধুই খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার মুক্তির দাবি সংবলিত বড়-ছোট ব্যানার-পোস্টার।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ এ জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেবেন। প্রথমবারের মতো ঐক্যফ্রন্টের মঞ্চে উঠবেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
পিএম/এজেডএস/জেডএস