মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই দিপালী উৎসব শুরু হয়। প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে দীপ জ্বেলে দেওয়ার এই রেওয়াজ চলছে বছরের পর বছর ধরে।
এদিকে প্রিয়জনের স্মৃতিতে মোমের আলো জ্বালানো ছাড়াও সমাধিতে তার প্রিয় খাদ্য সহ নানা উপাচার ও ফুল দিয়ে সমাধি সাজিয়ে তোলা হয়। পূর্বপুরুষের স্মৃতিতে করা হয় প্রার্থনা।
শ্মশান ঘুরে দেখা যায়, সমাধিস্থলে দীপ জ্বালিয়ে মৃত ব্যক্তির ছবি ফুল চন্দন দিয়ে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে সমাধির ওপর। প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে খাবার-দাবারও দেওয়া হয়েছে অনেক সমাধিতে। সেসঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে ধুপ ও ধুপকাঠি। আর শ্মশানে আগতদের সেবাদানে নিয়োজিত রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
জানা গেছে, সোমবার (৫ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে ভূত চতুর্দ্দশী আরম্ভ হবে এবং মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এই তিথি থাকবে। এরপর রাত ১২টা ১ মিনিটে শ্রী শ্রী শ্মশান কালি মাতার পূজা অনুষ্ঠিত হবে মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার জানান, প্রতি বছর ভূত চতুর্দশী পূণ্য তিথিতে দিপালী উৎসব হয়ে থাকে। প্রিয়জনের সমাধিতে দীপ জ্বালিয়ে দেওয়ার সেই প্রথা উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে হয়ে আসছে। ঐতিহ্যবাহী এই মহাশ্মশানে প্রায় লক্ষাধিক সমাধি স্থাপন করা রয়েছে। যাতে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষের সমাগম হয়েছে এই শ্মশানে। এখানে বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্বসহ সমাজসেবীদের সমাধি রয়েছে।
বরিশালের লাকুটিয়া খাল ঘিরে প্রায় চার একর জায়গায় জুড়ে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ এ মহাশ্মশান। প্রায় পৌনে দুইশো বছর সময় ধরে চলে আসা এই রেওয়াজ অনুযায়ী প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে দিপালী উৎসবে জ্বালানো হয় প্রদীপ। দিপালী উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে প্রতিবছরের মতো জোরদার অবস্থানে রয়েছে পুলিশ ও র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী পুরো শ্মশানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করছে। পাশাপাশি শ্মশান এলাকায় ছোট পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে মেলার।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৮
এমএস/এএটি