ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে ডিবি’র ৪ সদস্যকে গণপিটুনি, আটক ৪০

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৮
যশোরে ডিবি’র ৪ সদস্যকে গণপিটুনি, আটক ৪০

যশোর: যশোরের ঝিকরগাছায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসী মিলিত হয়ে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের চার সদস্যকে মারধরের ঘটনায় ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৯ নভেম্বর) দিনব্যাপী পুলিশের একাধিক দলের অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

যদিও গ্রামবাসীর দাবি, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের ৭০ থেকে ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে।

তবে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রক্রিয়াও চলছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) রাতে ঝিকরগাছা উপজেলার মাটিকুমড়া গ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযানে গেলে ভুয়া মনে করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে মিলিত হয়ে তাদের ওপর হামলা করে গ্রামবাসী। এতে ডিবি পুলিশের কনস্টেবল মুরাদ হোসেন, শিমুল হোসেন, মামুন আলী এবং গাড়ি চালক শাওন আহত হন।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ঝিকরগাছায় চিহ্নিত এক মাদক বিক্রেতাকে আটকের জন্য ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযানে যায়। একপর্যায়ে ওই দলটিকে ভুয়া পুলিশ মনে করে তাদের ওপর হামলা চালায় গ্রামবাসী।

পরে পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে যশোরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও দাবি করেন এসপি।

তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটাতে কোনো চক্র পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

এদিকে, শুক্রবার সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফারুক হোসেন ও তার ভাতিজা আসাদুল ইসলামকে জখম অবস্থায় আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে তারা জখম হয়েছেন। তবে আটকদের পরিবারের দাবি, পুলিশ পিটিয়ে জখম করেছে। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

গণগ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে মাটিকুমড়া গ্রাম।

এলাকাবাসীর দাবি, সম্প্রতি গ্রামের জহিরুল নামে এক মাদক বিক্রেতার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে কয়েকজন ব্যক্তির। তারা পুলিশ পরিচয়ে নিরীহ লোকজনকে আটক করে বাণিজ্য করছিল। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, পুলিশ পরিচয়ধারীরা ওই মাদক বিক্রেতার তথ্যমতে এলাকার নিরীহ মানুষকে মাদক দিয়ে আটক করে টাকা দাবি করতেন। একপর্যায়ে ওই মাদক বিক্রেতার অনুরোধে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হতো। এছাড়া গ্রামে ছিনতাই-চুরির ঘটনাও বেড়ে গিয়েছিল। এতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ পরিচয়ে চার ব্যক্তি গ্রামে ঢুকেন। পরে টের পেয়ে গ্রামবাসী তাদের ঘিরে ফেলে। তাদের কাছে পরিচয় জানতে চায় গ্রামবাসী। কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা ছিল না। গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়, তারা ভুয়া পুলিশ। এলাকাবাসীর সঙ্গে তারা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গুলি-ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই চারজনকে গণপিটুনি দেয়। একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। ওই মাইক্রোবাসে দেশিয় অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৮
ইউজি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।