ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৮
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে পঞ্চগড়ের দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন

পঞ্চগড়: ‘ঝক-ঝক-ঝক ট্রেন চলেছে, রাত দুপুরে অই। ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে ট্রেনের বাড়ি কই?’— কবি শামসুর রাহমানের কবিতার মতো ট্রেনের বাড়ি খোঁজার অপেক্ষা প্রায় শেষ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্বপ্নপূরণের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলাবাসী ট্রেনের বাড়ি খুঁজে পাচ্ছেন।

দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের পর শনিবার (১০ নভেম্বর) সকাল এবং রাতে দুই দফায় সরাসরি আন্তঃনগর দু’টি ট্রেন পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে চলাচল শুরু করবে।  

পঞ্চগড় থেকে শুরু করে ‘দ্রুতযান’ এবং ‘একতা’ এক্সপ্রেস নামে দু’টি ট্রেন নিয়মিত ২৩টি স্টেশন অতিক্রম করে পৌঁছাবে ঢাকায়।

এটি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে দূরত্বে ট্রেন চলাচল। আর তাই পঞ্চগড়বাসী এখন আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন।

পঞ্চগড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল পঞ্চগড় থেকে সরাসরি ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল। এই দাবিতে পঞ্চগড়বাসীসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, ছাত্র, যুব সমাজ দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল।
পঞ্চগড়ের দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন
‘পঞ্চগড়বাসী’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সদস্য রনি মিয়াজী বাংলানিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের প্রাণের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। অনেকের কাছে আমরা পাগল বেশে জায়গা পেয়ে ছিলাম, আমাদের নাকি কাজ কাম নাই ট্রেন চাওয়া বলে বোকামি। আজ আর তাদের বলার কিছু নাই। আমরা ট্রেনের দাবিতে ব্যানার নিয়ে তিন তিন বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী হাসি মুখে বলে ছিলেন ব্যানার নামিয়ে ফেলো পঞ্চগড়ে আন্তঃনগর ট্রেন চলে যাবে। অবশেষে আমরা এই ট্রেন পাচ্ছি। ’

পঞ্চগড় রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে রেলপথে পঞ্চগড়ের দূরত্ব ৬৩৯ কিলোমিটার। এতদিন দিনাজপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা’ এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টি চলাচল করতো। এখন থেকে প্রতিদিন পঞ্চগড় স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ‘দ্রুতযান’ এক্সপ্রেস।

পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত দ্রুতযান ও একতায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাথের ভাড়া এক হাজার ৯৪২ টাকা, এসি চেয়ারের ভাড়া এক হাজার ৫৩ টাকা, নন এসি বাথের ভাড়া এক হাজার ১৪৫ টাকা এবং শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৫০ টাকা নেওয়া হবে।  

আপাতত দুই ট্রেনে পঞ্চগড়ের জন্য ৩৫টি করে শোভন চেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে পঞ্চগড় রেলস্টেশন আরও ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হবে বলেও জানান তিনি।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন বাংলানিউজকে বলেন, দেশের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ হচ্ছে এটি। এটা বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়নেরই একটি অংশ। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে রেল বিভাগ। উদ্বোধনের দিন সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনন্দ র‍্যালিসহ পঞ্চগড় রেলস্টেশনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।