কথাগুলো বলছিলেন ১০৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবুল হাশেম মিয়া। তিনি চোখে কম দেখা ও কানে কম শুনলেও স্মৃতিশক্তি এখনো লোপ পায়নি।
সেই দিনের কথা জানতে চাইলে আবুল হাশেম বাংলানিউজকে বলেন, সেই বন্যায় ঘর ভেঙে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাঁঠাল গাছের মাথায় উঠে ছিলাম। ভাগ্যক্রমে কয়েকজন বেঁচে গেলেও ছোট ভাই আদম আলী, আমার স্ত্রী ও ছেলেসহ পাঁচ জন মারা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী অপর একজন সিরাজুল হক মোল্লা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যার পরেই হঠাৎ ঝড়ো বাতাস শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যেই পানিতে তলিয়ে যায় সব এলাকা। ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। সকালে উঠেই দেখি খাল, বিল, ধান ক্ষেত এবং গাছের মাথায় লাশ আর লাশ। এ রকম ভয়াবহ অবস্থা এবং লাশের সংখ্যা আমার বয়সে দেখিনি।
১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় একটি শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদশ) দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে। এ পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এবং এটি সর্বকালের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি। এ ঝড়ের কারণে প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। যার অধিকাংশই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের সমুদ্র সমতলের ভূমিতে জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা যায়। এটি ১৯৭০-এর উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের ষষ্ঠ ঘূর্ণিঝড় এবং মৌসুমের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিল। এটি সিম্পসন স্কেলে ‘ক্যাটাগরি ৩’ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এনটি