বাহনসহ দেবী আসছেন। তাদের সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন মহাদেব।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেছে মাগুরায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান কাত্যায়নী পূজা। এদিন বিকেল ৪টায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে উৎসবের প্রথম দিনের কার্যক্রম।
শাস্ত্রমতে, মা দুর্গার ষষ্ঠী রূপের নাম কাত্যায়নী। তার কাত্যায়নী নাম হওয়ার পিছনে কাহিনী হল –‘কত’ নামে এক বিখ্যাত মহর্ষি ছিলেন। তার পুত্র হলেন ঋষি কাত্য। সেই ‘কত্য’ গোত্রে বিশ্ব প্রসিদ্ধ মহর্ষি কাত্যায়ন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভগবতী পরাম্বার উপাসনায় বহু বছর ধরে কঠিন তপস্যা করেছিলেন। তার একান্ত প্রার্থনা ছিল মাতা ভগবতী তার গৃহে কন্যারূপে আবির্ভূত হন। ভগবতী মা তার এই প্রার্থনা মেনে নেন।
কিছু কাল পরে যখন পৃথিবীতে মহিষাসুরের অত্যাচার বেড়ে গেল, তখন ব্রহ্ম, বিষ্ণু, মহেশ্বর তাদের নিজ নিজ তেজের অংশ দিয়ে মহিষাসুরদের বিনাশের জন্য এক দেবীকে সৃষ্টি করলেন। মহষি কাত্যায়ন সর্বপ্রথম আরাধনা করেন। তাই একে দেবী কাত্যায়নী বলা হয়।
স্বপন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, মহষি কাত্যায়নের গৃহে কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন। আশ্বিনের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে জন্মগ্রহণ করেন শুক্লা সপ্তমী, আষ্টমী ও নবমী- এই তিনদিন মাতা কাত্যায়নী কাত্যায়ন ঋষির পূজা গ্রহণ করে দশমীর দিন মহিষাসুরকে বধ করেন।
মাতা কাত্যায়নী অমোঘ ফলদায়ী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে লাভ করার জন্য গোপীগন কালিন্দী-যমুনা তীরে আরাধনা করেছিলেন। দুর্গাপূজার ষষ্ঠী দিনে এই রূপের পূজা করা হয়। এই দিনে সাধকের মন ‘আজ্ঞা’ চক্রে স্থির হয়। যোগসাধনায় এই আজ্ঞাচক্রের স্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই চক্রে স্থির মন-সম্পন্ন সাধক মা কাত্যায়নীর শ্রীচরণে নিজে সবস্ব নিদেবন করেন।
মাতা কাত্যায়নীর প্রতি ভক্তি ও আরাধনায় মানুষ অতি সহজে ধম-অথ-মোক্ষ রূপ ফল প্রাপ্ত হয়। রোগ-শোক-সন্তাপ-ভয় ইত্যাদি সর্বতোভাবে বিনষ্ট হয়। জন্ম-জন্মান্তরের পাপ দূর করার জন্য মায়ের আরাধনার থেকে বেশি সুগম ও সরল পথ আর নেই। আমাদের সর্বতোভাবে মায়ের শরণাগত হয়ে তার পূজা-আচনায় তৎপর থাকা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
জিপি