ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের ব্যবস্থা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
‘ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের ব্যবস্থা’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হিসেবে নয়াপল্টনে বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে পুলিশের ওপর বিএনপিকর্মীদের হামলা পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটা নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে ধুম্রজাল তৈরি করে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র এটা।

তিনি বলেন, দুপুর আনুমানিক একটার সময় বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে দুই মনোনয়ন প্রার্থী মির্জা আব্বাস ও মেজর (অব.) আখতার এসেছিলেন তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে।

এ সময়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের পুলিশ সব সময়ই বলে আসছিল একটি রাস্তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখার জন্য। তারা সম্পূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে দুই গ্রুপ এবং দীর্ঘক্ষণ যাবত অন্যান্য গ্রুপ অবস্থান করছিল। ওই দুই গ্রুপ আসার পরেই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী খেয়াল করে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে এবং ধাক্কাধাক্কি ও অসহিষ্ণু একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

“তারপরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের ওপর তারা ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে যখন পুলিশ বলছিল যানবাহন চলাচলের জন্য একটি রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য। পুলিশ তাদের নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সেই সময় একটা ধাক্কাধাক্কি এবং পুলিশের ওপর আক্রমণ, আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন। ”

ঘটনাস্থালে ১৩ জন পুলিশ এবং তিনজন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পুলিশের দু’টি নতুন গাড়িতে বিএনপি কর্মীরা অগ্নিসংযোগ করে, ভাঙচুর করে। দুটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়। তারা একটি এপিসি ভেহিকেলেও আগুন ধরাবার চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ সক্রিয় থাকাতে সেটি রক্ষা পায়।

তিনি আরো, আমরা মনে করি এটা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। আমরা মনে করি, যখন দেশ একটা সুন্দর নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন যখন সিডিউল ডিক্লিয়ার করেছে, দেশের মানুষ যখন একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে, দেশের মানুষ যখন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে; সেই সময় আমরা মনে করি, পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি একটা নাশকতা তৈরি করে একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করে নির্বাচনটা বানচাল করার একটা অপচেষ্টা। হঠাৎ করে পুলিশের ওপর আক্রমণটা আমাদের সেটিই মনে করিয়ে দেয়।

এ হামলার ঘটনাটাকে অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, এই ২০ দল এবং ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দফা আলোচনা করেছে, নির্বাচন কমিশনের সাথে আলাপ করেছে। যখন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সবাই যখন নির্বাচনের জন্য উন্মুখ তখনই এ ঘটনা ঘটলো। এটা স্পস্টই প্রতীয়মান হয় যে, এটা একটা উদ্দেশ্যমূলক ষড়যন্ত্র নির্বাচনকে বানচাল করার। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

সরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কেন? প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাস্তাটি একটা ইমপর্টেন্ট রাস্তা আর ধানমন্ডি সেখানে একটা বাইলেন। সেটা একটা রেসিডেন্সিয়াল রাস্তায় ঢোকার রাস্তা। সেই রাস্তাটাও আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে খালি রাখার জন্য। সবগুলো রাস্তা চালু রাখতে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমিও ওখানে (ধানমন্ডি) থাকি, আমিও ওই রাস্তায় চলাচল করেছি, আমার হয়তো সময় লেগেছে কিন্তু আমি যেতে পেরেছি। এতো ভিড়ের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তাগুলো সচল রাখতে কাজ করছিল, অন্যকিছু করেনি।

“পুলিশ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেখানে (নয়াপল্টন) কাজ করছিল তারা আগেভাগে কিছুই করেনি। তারা কেবল যান চলাচল ঠিক রাখার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। দুই নেতা যখন ঢুকলেন তখনই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করে বলেন, পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে। দুটি ভ্যান ভস্মীভূত হয়েছে। এপিসি কারে আগুন ধরানোর চেষ্টা করছিল। পুলিশ যতটুকু প্রয়োজন করেছে। মারমুখি আচরণ থাকলে ১৬ জন আহত হত না। পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করেছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের ঘটনার জন্য কতটুকু প্রস্তত? প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় সবকিছুর জন্য প্রস্তুত থাকি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর দক্ষতা ও ক্ষমতা যথেষ্ট রয়েছে। যেকোন পরিস্থিতি তারা মোকাবিলার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকবে।

রাজনৈতিক মামলা সম্পর্কে কামাল বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক মামলা রুজু করিনি। সবগুলো মামলাই করেছি ভাঙচুর কিংবা বাধাদান কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শন কিংবা আইসিটি অ্যাক্টের মামলা হয়েছে। ২০ দলীয় জোট প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে একটা লিস্ট দিয়েছেন। আমরা লিস্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। সত্যতা যদি পাই তাহলে আমরা সেগুলোর ব্যবস্থা নেব। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য। আমরা অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।