বুধবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নগর ভবনের তৃতীয় তলার সম্মেলন কক্ষে বিসিসির চতুর্থ পরিষদের প্রথম সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, নগর ভবনের কাজ নগরবাসীকে সেবা দেওয়া।
দেনার বিষয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় বিগত দিনে নগরবাসীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের সেবা না দিয়ে যারা করপোরেশন পরিচালনায় ছিলেন তারা প্রতারণা করেছেন। সিটি করপোরেশন আমাদের একটি ইবাদত করার স্থান হওয়া উচিত। আমি মনে করি সিটি করপোরেশন আমার নিজের ঘর, কিন্তু যদি আমরা মনে করি এটি ব্যবসাস্থল তাহলে করপোরেশন এখন যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায়ই থাকবে।
মেয়র বলেন, সব হিসাব আমি খতিয়ে দেখতে পারিনি। করপোরেশনের যে লোন রয়েছে, তাকে আমি লোন বলবো না। করপোরেশনের দায়িত্বে কর্মকর্তা-কর্মচারী, নেতৃরা যারাই এতোদিন ছিলেন, এগুলো তাদের অদক্ষতা না অসততা বলবো তা বুঝি না। কারণ তাদের কারণেই এ অবস্থা। করপোরেশনের যে পরিমাণে আয় দেখেছি, তাতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাকি থাকার কথা না।
সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, করপোরশনের কর্মচারীদের সঠিক হিসাব এখনো পাইনি, কতোটাকা আয় হয় সঠিকভাবে এখনও জানতে পারিনি, আমাদের কতোটুকু সম্পতি রয়েছে তাও জানতে পারিনি। কারণ আমাদের একটা রেকর্ড রুম নেই। আজ আমি কি করলাম, আগামীকাল আমি জানতে চাইবো তা পারবো না। আমার এই শেকরই যদি শক্ত না হয়, তবে সামনে আমি কীভাবে কাজ করবো। আমি এখানে টাকা বানানোর জন্য আসিনি। আমি আগেই বলেছি আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমি আমার অফিসে বসে চা খাওয়া ছাড়া মনে হয় না কোনো টাকা পয়সা নিয়েছি। করপোরেশন থেকে যে গাড়ি আমি পাই তাও ব্যবহার করছি না। আমার ব্যক্তিগত গাড়ির তেল আমি নিজেই কিনে নিয়ে করপোরেশনের কাজে ব্যবহার করছি।
কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রথমেই তেতো কথা বলে নেওয়া ভালো। ৪০ জন কাউন্সিলর আমার ৪০টি পার্ট, আপনার যদি সেভাবে কাজ না করেন, তাহলে আমার শরীরে ঘা হয়ে যাবে। বরিশাল নিয়ে আমার যে চিন্তা বা পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে নামতে হলে আমার সুদক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন। কিন্তু এখানে সেই সু-দক্ষ কিছু দেখছি না। আমি চোঁখে ধোয়া দেখছি। এ সিটি করপোরেশনে যারা যে স্থানে রয়েছেন তারা সে পদে যোগ্য কিনা এটাই আমার সন্দেহ।
মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম, ওয়ার্টার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, সেবক কলোনি, সদর রোড মার্কেট-এগুলি বুয়েটের প্রকৌশলী ও আমাদের অডিট টিম দেখবেন। সিডিউল অনুযায়ী এগুলো কাজ হয়েছে কিনা তা না দেখে এগুলোতে আমরা হাতও দেবো না, বুঝেও নেবো না। এতে যতোদিন লাগুক। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা নতুন করে করতে হবে, অশ্বিনী কুমার হল ও বিবির পুকুর পাড়ে কোনো বিলবোর্ড লাগানো যাবে না। এছাড়া শহরে কোথাও বিলবোর্ড লাগাতে হলে নির্ধারিত ট্যাক্স দিয়ে নির্ধারিত সময়ের জন্য লাগাতে হবে এবং খুলেও নিতে হবে।
সভায় সিটি করপোরেশনের নতুন দায়িত্ব নেওয়া ৪০ কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/