আর সংশোধনের সুযোগ নেই। অথচ ৫০ ভাগ লক্ষ্য এখনও অর্জন হয়নি।
দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য স্থায়ী তহবিলের ব্যবস্থা করা। ওই তহবিল আয়বর্ধক কাজে নিয়মিতভাবে ব্যবহার করে স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করতেই আবারও এমন উদ্যোগ।
প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আকবর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় ঋণ নিয়ে প্রতি মাসে স্বাবলম্বী পরিবারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দারিদ্র্য নিরসনে সারাদেশে প্রকল্পের কার্যক্রম সফলভাবে চলছে। আরও অধিক মানুষের দারিদ্র্য নিরসনে প্রকল্পটি সংশোধন করা দরকার। কিন্তু প্রকল্প সংশোধনের সেই সুযোগ নেই। কিন্তু দেশে দরিদ্র মানুষ রয়ে গেছে একথা সত্য। দেশ থেকে দারিদ্র্য তাড়াতে প্রকল্পটি চলমান রাখা জরুরি। কিন্তু সেই সুযোগ নেই। তাই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে নতুন একটা প্রকল্প নেয়ার কথা ভাবছি, আলোচনাও চলছে।
প্রকল্পের আওতায় গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠন হয়েছে ৮২ হাজার ৮৭৯টি, লক্ষ্য ৯১ হাজার ৯২টি। ৪০ লাখ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়বর্ধক গড়ে তোলার কথা, এখাতে অর্জন মাত্র ২৭ লাখ ৩৩ হাজার।
নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন কাজ অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় একসঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি ভিক্ষুক পুনর্বাসন কাজ করা হবে।
প্রকল্পটি গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তৃণমূলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করা, তাদের সঞ্চয়ে উৎসাহ দেওয়া, সদস্য সঞ্চয়ের বিপরীতে সমপরিমাণ অর্থ বোনাস দেওয়া, সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। এছাড়া রয়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য পুঁজি গঠনে সহায়তা করা ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করাসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা।
এসব উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ‘একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প’ হাতে নেয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে প্রকল্পটি ফের চালু করা হয়। বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলায় ৪৮৫টি উপজেলায় ৪৫০৩টি ইউনিয়নের ৪০ হাজার ৫২৭টি ওয়ার্ডে প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে।
ওয়ার্ডগুলোর অধীনে প্রতিটি গ্রামে ৬০টি গরিব পরিবারের সমন্বয়ে একটি গ্রাম-উন্নয়ন সমিতি গঠন করে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২৫ লাখ দরিদ্র পরিবার এ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রকল্পের আওতায় সরকার ৩ হাজার ১৩২ কোটি টাকা ব্যয় করছে।
প্রকল্পের আওতায় ঋণ দিয়ে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৫৮ হাজার পরিবারকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশ। এসব পরিবারের মূলধন এখন ৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। যেখানে সরকার মাত্র দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। একজন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা ঋণ পাবেন। একবার পরিশোধ করে পুনরায় ঋণ নিতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ