এখনও পোস্টার, বিলবোর্ড না সরানোয় খোদ রাজনৈতিক দলের মধ্যেই রয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। এজন্য একে অপরকে দোষারোপের পাশাপাশি তীর ছুড়ছেন কমিশনের দিকে।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (গণসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচারণা চালানো যাবে না। নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, দেয়াললিখন, বিলবোর্ড, গেট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল বা আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচারণা ও নির্বাচনী ক্যাম্প থাকলে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ খরচে অপসারণ করবেন।
এদিকে কমিশনের প্রধম দফায় বেঁধে দেওয়া সময়ে এসব পোস্টার না সরানোয় দ্বিতীয় দফায় আবারও নির্দেশনা দেয় ইসি। ইসির প্রথম দফার সময় শেষ হয়েছে ১৪ নভেম্বর রাত ১২টায়। পরে নিজ নিজ পোস্টার সরাতে আরও তিন দিন সময় বেঁধে দেয় ইসি। আর দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হচ্ছে রোববার রাত ১২টায়। কিন্তু সরেজমিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে যা দেখা গেছে তাতে দ্বিতীয় দফায়ও অপসারণের কাজ কেউ করেছে কিনা সন্দেহ। রাজধানীতে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ও সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রচারে সরব আছেন শিল্পপতি আদম তমিজি হক। ‘মানবিক ঢাকা’ স্লোগান নিয়ে তিনি সাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, করছেন নানা সামাজিক কাজ। তার লিফলেট ও পোস্টার চোখে পড়ে চলাচলরত মিনিবাস, ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতে।
একইভাবে বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি। বিভিন্ন বাস, মিসিবাস, ফ্লাইওভারসহ মিরপুর-পল্লবী অঞ্চলের ভবনের দেয়াল, রাস্তার মোড়ে তার পোস্টার ও ব্যানার চোখে পড়ে। একই সঙ্গে নিজের ফেসবুক পেজেও চলছে প্রচারণা।
এছাড়া জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন হাজি সেলিম, গোলাম মোস্তফা, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, মোহাম্মদ নাজমুল হক, ডা. দিলীপ কুমার রায়, হারুনর রশিদ মুন্না, আমিরুল হক খোকা, সাইফুদ্দিন মিলন, রাশেদ খান মেনন। প্রচারে আছেন বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী। যদিও বিএনপির এসব নেতাদের পোস্টার ও ব্যানার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ভিত্তিক প্রচার চলছে।
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক নেতাদের পোস্টার ও ব্যানার এখনও সরানো হয়নি। এসব বিষয় দেখেও দেখছে না ইসি। এতে আমরা বুঝি ইসি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। একই সঙ্গে তিনি সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘হাসিনা এ ডটারস টেল’ এর প্রচার বন্ধের কথাও বলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ডকুমেন্টারিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার রয়েছে, তিনি নির্বাচনে একজন প্রার্থী। তাই এটার প্রচার বৈধ না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে পারবেন না- এটা ইসির নির্দেশ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও দলীয় নেতা-কর্মীদের বলেছেন। আমরাও সেভাবে সবাই বলেছি, ইতোমধ্যে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট বলেন, ইসি যে যে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন আমরা তার সবগুলো নির্দেশ মেনে চলবো। এখনও যে সব পোস্টার বা ব্যানার আছে দলীয় নেতা-কর্মীদের বা সরাতে বলা হয়েছে। আশাকরি আজ রাতের মধ্যেই সব সরানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
ইএআর/এএ