সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু-তে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিমরাড) উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ।
দিনব্যাপী এ সেমিনারে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খোরশেদ আলম ও নৌ কর্মকর্তা (অব.) রিয়ার অ্যাডমিরাল এ এস এম এ আওয়াল, সাবেক ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর কে ধাওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন (অব.) রিচার্ড ফ্রান্সিস সিয়ার্স, মালয়েশিয়ার মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের চেরিলা রিতা কের, শ্রীলঙ্কার পাথফাইন্ডার ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যাডমিরাল প্রফেসর জয়নাথ কলোমবিয়া মেরিটাইম বিষয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রেসিডেন্ট ও সিইও ফারুক সোবহান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে মেরিটাইম ক্ষেত্রে পারষ্পরিক তথ্য বিনিময়, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার উদ্দেশ্যে বিমরাড-এর সঙ্গে ভারতের ন্যাশনাল মেরিটাইম ফাউন্ডেশন (এনএমএফ), যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানিয়েল কে। ইনউইয়া এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ (ডিকিআই এপিসিএসএস) এবং শ্রীলংকার প্যাথফাইন্ড ফাউন্ডেশন (পিএফ) এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সেমিনারে সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণ এবং এর সঠিক ব্যবহার, সমুদ্র দূষণ প্রতিরোধ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সমুদ্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে বিভিন্ন দেশের মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা সমুদ্র সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে অংশীদারিত্ব, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব অনুধাবণ করে ১৯৭৪ সালে টেরিটোরিয়াল ওয়াটার অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে, যা বাংলাদেশের সমুদ্র অর্থনীতির বিশাল সম্ভবনার দুয়ারকে উন্মোচিত করেছে।
বিমরাড এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও নৌবাহিনী প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক আগ্রহে বাংলাদেশ অর্জন করেছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের সমুদ্র এলাকা। এই সমুদ্র মৎস্য ও খনিজসহ বিভিন্ন সম্পদে পরিপূর্ণ। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে এই সম্পদকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, এই সেমিনারে বিভিন্ন মেরিটাইম বিশেষজ্ঞদের তাত্ত্বিক জ্ঞানভিত্তিক আলোচনা টেকসই উন্নয়নে সমুদ্র নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিতকরণের পথকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। পাশাপাশি এ সেমিনার সমুদ্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতাগুলোকে চিহ্নিত করে তা থেকে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান অর্জনের পথকে প্রশস্ত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৮
পিআর/আরআইএস/