সেই ভ্রাম্যমাণ দোকানের তিন পাশ ঘিরে ক্রেতা সাধারণ শীতকালীন রকমারি পিঠার স্বাদ আস্বাদনে অর্ডার দিয়ে অপেক্ষা করছেন। কেউ বসে আবার কেউবা দাঁড়িয়ে।
আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ক্রেতা সাধারণের হাতে পিঠা তুলে দিচ্ছিলেন দুই তরুণ। এসব পিঠা কিনতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও দেখা যায়। অনেকে দোকানে বসেই পিঠা খান। আবার কেউ কেউ পিঠে কিনে বাসায় নিয়ে যান।
বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায় কারমাইকেল সড়কের শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথের পাশে খানিকটা বড় পরিসরেই বসানো হয় শীতকেন্দ্রিক ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান।
মাসুদা বেগম, তার স্বামী ইদ্রিস আলী, সহযোগী রাবেয়া বেগম, কারিমুল্লা, পান্নাসহ আরো দু’জন। তাদের সবার বাড়ি শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম এলাকায়। প্রত্যেক বছর শীতের শুরু থেকে শেষ অবধি তারা পিঠা-পুলির ব্যবসা করে থাকেন।
তরুণ সহযোগী কারিমুল্লা কাজের ফাঁকে ফাঁকে আলাপচারিতায় বাংলানিউজকে জানান, মাসুদা বেগম ও তার স্বামী ইদ্রিস আলী সম্পর্কে তার দাদা-দাদী। তারা প্রায় বিশ বছর ধরে শীতকালীন পিঠা-পুলির ব্যবসা করে আসছেন। শীত পেরিয়ে গেলে অন্য কাজ করেন।
তিনি জানান, রোজ বিকেল হলেই তারা পিঠার দোকান দিয়ে বসেন। তবে দুপুর থেকেই আয়োজনটা শুরু করতে হয়। কারণ দোকান বসানোর পর থেকেই বেচাবিক্রি শুরু হয়ে যায়। দিনের আলো ডু্বে যাওয়া মাত্রই ক্রেতা সাধারণের ভিড় বাড়তে থাকে।
তাদের দোকানে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাঁল পিঠা, ঝাঁল-মিষ্টি কুশলি পিঠা বানানো হয়। এর মধ্যে ভাপা প্রতি পিস ৫ টাকা, চিতই ১৫ টাকা, ঝাঁল পিঠা ১২ টাকা ও কুশলি প্রতি পিস ৭ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। এসব পিঠা তৈরিতে কড়াই, পাতিল, চালের গুড়া, গুড়, নারিকেল, ডিম, শুটকি ভর্তা, তেলসহ আনুসাঙ্গিক সামগ্রী প্রয়োজন হয় বলেও জানান কারিমুল্লা।
এদিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, রেলস্টেশন, আমতলাসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন পিঠা তৈরির একাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান দেখা যায়।
তাদেরই একজন আমির হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, ‘এসব দোকানিদের বেশির ভাগই অন্য সময় ভাজিপুরির ব্যবসা করে থাকেন। তবে শীতকালে শীতের পিঠার চাহিদা বেশি থাকায় তারা এ ব্যবসা করেন।
কেননা শীতের পুরো সময়টা জুড়ে শহুরে মানুষের কাছে শীতকালীন পিঠার আলাদা চাহিদা থাকে। বেচাবিক্রিও ভাল হয় যোগ করেন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানি আমির হোসেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের জীবন ইসলাম নামের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, বগুড়ায় থেকে একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। এ কারণে ইচ্ছে থাকলেও বাড়ি গিয়ে সহজে শীতের পিঠা খাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই দোকানই ভরসা।
রুম্পা আকতার, জহুরুল ইসলাম, মৌসুমী খাতুনসহ কয়েকজন ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, শহুরে জীবনে সব সময় নানান কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে বাড়িতে নতুন কিছু তৈরি করা খানিকটা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই দোকানের পিঠার ওপরই নির্ভর করতে হয়। পাশাপাশি এসব পিঠা কিনে বাসায়ও নিয়ে যাওয়া যায় বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
এমবিএইচ/আরএ