রোববার (২৫ নভেম্বর) ইউএনএইচসিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণ অধিকাংশই রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করে।
জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে তাদের অনেক দূর পথ পারি দিতে হয় এবং এ কাজে নিয়োজিত বেশিভাগই শিশু ও নারী যারা এসময়ে নানারকম ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। এছাড়াও এ পদক্ষেপ শরণার্থী আগমনের ফলে পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়েছে তা নিরাময়ে ও পরিবেশ রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও এলপিজি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাম্পজুড়ে বায়ু দূষণ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি শরণার্থীদের শারীরিক অবস্থার উন্নয়ন আশা করা হচ্ছে। যেহেতু শরণার্থীরা কাঠ, অন্যান্য দাহ্য সামগ্রীর বিনিময়ে পরিবেশবান্ধব এলপিজি ব্যবহার করবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মতে, ক্যাম্পজুড়ে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ একটি অন্যতম সমস্যা, যে সমস্যার অন্যতম মূলকারণ এ ধোয়াযুক্ত ঘনবসতি।
রোহিঙ্গা আগমনের ফলে পরিবেশে এর প্রভাব অত্যন্ত দৃশ্যমান। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশ আসে। তারা এখানে এসে আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করা লক্ষাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে যুক্ত হয়। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার এলাকায় বসবাস করছে, যারা এযাবৎকালে গণহারে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ মেট্রিক টন কাঠ কেটে ও জ্বালিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে, যা প্রতিদিন ৫টি ফুটবল খেলার মাঠের সমান জায়গা বন উজাড়ের সামিল।
এলপিজি কর্মসূচির অংশ হিসেবে শরণার্থীদের সরাসরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে, যেখানে তারা নিরাপদভাবে ও দায়িত্বের সঙ্গে এলপিজি ব্যবহারের হাতেখড়ি নিতে পারছে। প্রতিটি সিলিন্ডারে সাড়ে বারো কিলোগ্রাম এলপিজি থাকে, যা সাত জন সদস্যের একটি পরিবারের এক মাসের রান্নার জন্য যথেষ্ঠ। শরণার্থীরা প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে সিলিন্ডার রিফিলের সুযোগও পাবে। এ সিলিন্ডার ও চুলা স্থানীয়ভাবে তৈরিকৃত, যা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে।
শরণার্থীদের সহায়তার পাশাপাশি, স্থানীয় জনগণ যারা শরণার্থীদের আগমন ও আবাসনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের প্রতি সহায়তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সিলিন্ডার ও চুলা সরবরাহ করা হবে।
এ বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রণালয়সহ এবং ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (ফাও), আইওএম ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামসহ জাতিসংঘের অনেক সংস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
টিআর/এসএইচ