ট্রাকচালকও এক্ষেত্রে যেন বেশ করিৎকর্মা। সুযোগ বুঝে তার যন্ত্রদানব হয়ে উঠেছে ‘রাস্তার রাজা’।
পরে পেছনের চালকদের চেঁচামেচিতে অবশেষে হুঁশ ফেরে চালকের। শুধু যে ব্যস্ততম সড়কেই এমনটি হচ্ছে বিষয়টি তেমন নয়।
নগরের বাউন্ডারি রোড, গুলকিবাড়ি, সানকিপাড়া, গোহাইলকান্দিসহ ছোট-বড় প্রতিটি সড়কেই ঘটছে এমন ঘটনা। ভবন মালিকদের এমন খামখেয়ালিপনায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে নগরের বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের উপকণ্ঠে ময়মনসিংহ নগরে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। অনেক আগে থেকেই এ নগর আবাসিক হিসেবে জনপ্রিয়। তবে সম্প্রতি নগরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কের আশপাশে এমনকি পাড়ার অলিগলিতেও গড়ে উঠছে অনেক বহুতল ভবন।
নগরের গুলকিবাড়ি, সানকিপাড়া, নতুনবাজারসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের সামনেই বালি আর ইটের স্তুপ। দিন বা রাত নেই। নির্মাণসামগ্রী নিয়ে হরহামেশাই প্রবেশ করছে ট্রাক।
নিজেদের ইচ্ছামতো সড়ক দখল করে নামানো হচ্ছে মালামাল। এতে যানজট সৃষ্টি হলেও কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ফলে এমন দৃশ্য যেন ময়মনসিংহ নগরের বাসিন্দাদের জন্য গা-সওয়া হয়ে গেছে।
এছাড়া নগরীর বেশিরভাগ সড়কের পাশেই কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বালু, ইট কিংবা পাথর ফেলে রাখা হয়েছে। এতে করে সড়কে চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে। আবার অনেকে বহুল ভবন নির্মাণে নেট ব্যবহার করছেন না। ফলে ইটের ক্ষুদ্রাংশ ও পানি পথচারীর ওপর পড়ছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও পাত্তাই দেন না ভবন মালিকরা।
অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো সড়কে প্রভাবশালী বহুতল ভবনের মালিকরা ফুটপাত দখল করে ঢালাই মেশিন বসাচ্ছে। দিনের বেলায় ঢালাই মেশিনের শব্দে কান ঝালাপালা হওয়ার অবস্থা। প্রতিনিয়ত তারা এভাবে আইন অমান্য করলেও দেখার যেন কেউ নেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে খলিলুর রহমান দায়িত্ব পালনকালীন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলতো। ওই সময় টানা কয়েক মাসের সড়ক, ফুটপাত ও ড্রেনের ওপর থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ অভিযানে সাফল্য আসে।
এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখলে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু এখন অভিযান না থাকায় নগরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে আগের চেহারা দেখা যায়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দখল করা হলে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
এমএএএম/ওএইচ/আরআর