রোববার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামে হাজারো মানুষের।
শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা জানান, নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা যেন আগের যেকোনো সময়ের থেকে জনবান্ধব হয়।
স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া নাজনীন ও আকলিমা খাতুন এসেছেন। এবার প্রথমবারের মতো রাজশাহী-৩ আসনে ভোট দেবেন সুমাইয়া। তবে নির্বাচনে যেন আসলেই ভোট দিতে পারেন সেই নিশ্চয়তা চান এই তরুণী।
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নিজের প্রত্যাশা সম্পর্কে সুমাইয়া বাংলানিউজকে বলেন, এবার প্রথমবারের মতো ভোট দেবো। একটু ভয় ভয় লাগছে। ভালো নির্বাচন হোক এটাই চাই। আর নির্বাচনস্থলে সন্ত্রাস ও হট্টগোল ছাড়া সুষ্ঠুভাবে আমি আমার ভোট দিতে পারবো এটাই আমার প্রত্যাশা।
আর নতুন সরকারের কাছে আকলিমার দাবি শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানোর। আকলিমা বলেন, এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। আমরা চাই নতুন যে সরকার আসবে তারা শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াবে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ওয়াদা করে। নির্বাচনের পরেও তারা সেসব ওয়াদা পূরণ করবে সেটা ও আমরা চাই। তবে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এসেও কাঙ্খিত স্বাধীনতার অনেকটাই অধরা রয়ে গেছে বলে মনে করেন তরুণ-তরুণীরা।
ধামরাই উপজেলার কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি আক্তারের সঙ্গে স্মৃতিসৌধে এসেছেন তার মেয়ে রিফা তাসফিয়া ঐশী।
ঐশী বলেন, জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আজ আমরা দেশে মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারি। তবে যে স্বাধীনতা তারা আমাদের দিতে চেয়েছিলেন তার অনেকটুকুই আমরা এখনো পাইনি। বর্তমান প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতার কতটুকু রেখে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মা ফেরদৌসি আক্তার বলেন, এটা সত্যি যে স্বাধীনতার যে চিত্র আমরা আমাদের মধ্যে লালন করেছিলাম তার অনেকটুকুই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যেতে পারছি না। তবে আমি মনে করি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার অনেকটাই আমরা পেয়েছি। আবার অনেকটাই বাকি। তবে দেশের জনগণ চাইলে অধরা টুকু আমরা পেতে পারি। তরুণ প্রজন্ম বুকে স্বাধীনতাকে ধারণ করলে সত্যিকারের স্বাধীনতা আমরা অবশ্যই পাবো।
এদিকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় নতুন ভোটার আরিফা ও নাজনীনের।
আগামী নির্বাচনের পর কেমন সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চান সে বিষয়ে নিজেদের ভাবনার কথা জানান তারা।
পড়ুন>> স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আরিফা আক্তার বলেন, প্রথমবার ভোট দেবো আর এই ভোটের মাধ্যমে এমন সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চাই যারা তরুণদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে কাজ করবে। বিশেষ করে দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে পরিবর্তন আনবে। সর্বোপরি দেশে একটি আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে বা আনার জন্য কাজ করবে এমন একটি সরকার আমরা দেখতে চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইয়াসিন রহমান বলেন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ তখনই আমরা পাবো যখন সরকার নিজে হবে দুর্নীতিমুক্ত। তাই আমরা এমন একটি সরকার দেখতে চাই যারা নিজেদের জন্য না গুছিয়ে জনগণের জন্য একটি সুস্থ স্বাভাবিক সমাজ গড়ে তুলতে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এসএইচএস/ইএআর/এএটি