সকাল সাড়ে ৮টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। একইস্থানে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনী।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর সিনেমা হলসমূহে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডির আয়োজনে শহীদ হাদিস পার্কে মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শন, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিনা টিকিটে বিভাগীয় জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ, বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা, স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র রকেট ঘাটে দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা।
এছাড়া বিকেল ৩টায় পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে নারীদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা, সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ হাদিস পার্কে ‘সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনা, সিম্পোজিয়াম এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গিলাতলা শিশুপার্ক, বয়রা শিশু পার্কে শিশুদের বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ, ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর শহীদ হাদিস পার্কে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, ১৬, ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শন ইত্যাদি।
১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা ও কবিতা আবৃত্তি, ১৬ ও ১৮ ডিসেম্বর খুলনা বিসিক-এর উদ্যোগে বিসিক ভবন প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলাও রয়েছে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভোর ৬টায় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ৯টায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ। একইভাবে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে সকাল ৯টায় বিজয় র্যালি, র্যালি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় গল্লামারীতে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এরপর বেলা ১১টায় কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে নগর কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়া জাতীয় পার্টির নগর কার্যালয়ে বিকেল ৪টায় আলোচনা সভার আয়োজনও করেছে।
এদিকে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও উদযাপিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে ভোর সাড়ে ৬টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মুখে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এর পরপরই উপাচার্যের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী শোভাযাত্রাসহ ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলা চত্বরে পৌঁছান। এরপর উপাচার্য সর্বপ্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করলে সবাই শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন। তারপর উপাচার্য খানজাহান আলী হলে বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি দেয়ালিকার উদ্বোধন করেন। বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিকেল সাড়ে ৪টায় অদম্য বাংলার সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো খেলার মাঠে উপাচার্য একাদশ বনাম ট্রেজারার একাদশ প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সকাল ৯টায় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী, সকাল সাড়ে ৯টায় দুর্বার বাংলা চত্বরে গণসঙ্গীত, সকাল ১০টায় দুর্বার বাংলার পাদদেশে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে রয়েছে শিক্ষক বনাম ছাত্রের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ। এছাড়া বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া এবং সন্ধ্যায় অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও রয়েছে।
খুলনা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ভোরে গল্লামারী স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে ক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এমআরএম/এএটি/এইচএ/